মোঃ ইসলাম উদ্দিন তালুকদার :
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও জনস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল দশটায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. নুসরাত আরেফিন। সেমিনারে বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার, স্বাস্থ্য সহকারী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও পরিবেশগত বৈচিত্র্যের কারণে ডায়রিয়া, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, শ্বাসকষ্ট, হিট স্ট্রোকসহ নানা রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তারা আরও উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে—যেমন মৌসুমি ফসল উৎপাদনের পরিবর্তন ও নতুন কৃষিজ সুযোগ সৃষ্টি।
শীতকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করেন ড. নুসরাত আরেফিন।
তিনি বলেন, “শীতকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিসসহ শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগের প্রবণতা বাড়ে। হার্টের রোগীদের ক্ষেত্রেও রক্তচাপ পরিবর্তন ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাই শীতে গরম কাপড় ব্যবহার, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।”
সেমিনারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, জমে থাকা পানি অপসারণ, ঘরোয়া প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং সরকারি কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ড. নুসরাত আরেফিন বলেন,
মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণই প্রধান শক্তি। ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও সরকারি প্রচেষ্টা একসঙ্গে এগোলে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সেমিনারে উপস্থিত সাংবাদিক ও অংশগ্রহণকারীরা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের এই উদ্যোগকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এ ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম ছাতক উপজেলার জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।