স্বাধীন বিনোদন ডেস্ক:
ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি সাম্প্রতিক সময়ে সিনেমা থেকে কিছুটা দূরে থাকলেও, সামাজিক মাধ্যমে এখনো তিনি রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রে। রূপালি পর্দায় এখন আর আগের মতো নিয়মিত দেখা না গেলেও, অনলাইন দুনিয়ায় নিজের উপস্থিতি বজায় রেখেছেন নানা ছবি, ভিডিও ও ব্যক্তিগত জীবনের আপডেট শেয়ার করে।
সম্প্রতি পরীমনি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ৩২ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকাশ করেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক সঙ্গীতানুষ্ঠানে পরীমনি নিজেই সেলফি মোডে ভিডিও ধারণ করছেন। মঞ্চে লাইভ পারফরম্যান্স চলছিল, হঠাৎ এক গায়ক মাইক্রোফোন হাতে পরীমনির কাছে এসে দাঁড়ান এবং তার দিকে তাকিয়ে জনপ্রিয় বাংলা গান ‘এই মন তোমাকে দিলাম’ গাইতে শুরু করেন।
পরীমনিও হাসিমুখে গায়কের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান। মুহূর্তটি বেশ রোম্যান্টিক এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। গায়ক যখন পরীমনির দিকে হাত বাড়িয়ে দেন, অভিনেত্রীও সেই হাত ধরেন এবং একসঙ্গে গান চালিয়ে যান। শেষে ক্যামেরার দিকে আঙুল তুলে পরীমনি গাইতে থাকেন, “এই মন তোমাকে দিলাম।”
ভিডিওর শেষে তিনি ক্যাপশন দেন— “এই প্রেম তোমাকে দিলাম।”
এই ভিডিও প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ে। অল্প সময়ের মধ্যেই ভিডিওটি লাখো ভিউ অতিক্রম করে। ভক্তরা যেমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, তেমনি এক শ্রেণির নেটিজেন শুরু করেন তীব্র সমালোচনা।
অনেকে পরীমনির স্বতঃস্ফূর্ততা ও আনন্দময় ভঙ্গিমাকে প্রশংসা করে লেখেন, “জীবনটাকে উপভোগ করা শিখুন পরীমনির কাছ থেকে।” অন্যদিকে অনেকে এই ভিডিওকে “অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠ” বা “অশোভন আচরণ” বলে মন্তব্য করেছেন।
একজন নেটিজেন লিখেছেন,
“গান করো ভালো কথা, কিন্তু গায়ে উঠেপড়ে করার দরকার কী?”
আরেকজন মন্তব্য করেছেন,
“পরীমনির প্রেম শেষই হয় না, নতুন গানের সঙ্গে নতুন প্রেমের ইঙ্গিত!”
তবে পরীমনির দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমন বিতর্ক নতুন নয়। অভিনয় জীবনের শুরুর দিক থেকেই তিনি আলোচিত—কখনো তার বোল্ড চরিত্র নির্বাচনের জন্য, কখনো ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনা নিয়ে।
তার একাধিক বিয়ে ও বিচ্ছেদ, সন্তান জন্মের পর ‘সিঙ্গেল মাদার’ হিসেবে জীবনযাপন, এবং নিজের জীবনযাপন শৈলী নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোলামেলা উপস্থিতি—সবকিছুই তাকে বারবার জনদৃষ্টির কেন্দ্রে রেখেছে।
সম্প্রতি নিজের জন্মদিনও জাঁকজমকভাবে কয়েক দিন ধরে উদযাপন করেন পরীমনি। রাজধানীর একটি অভিজাত স্থানে পরীর সাজে আয়োজন করা সেই পার্টিতেও হাজির ছিলেন বিনোদন অঙ্গনের অনেক তারকা। জন্মদিনের সাজপোশাক, থিম এবং আলো-ঝলমলে পরিবেশ তখনও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
একজন অনুসারী মন্তব্য করেছেন,
“পরীমনি এখন নিজের মতো করে বাঁচতে শিখেছেন। মানুষ তার হাসি ভুলে গেছে, সে কারণেই সবাই তাকে ভুলভাবে বিচার করে।”
আরেকজন লিখেছেন,
“তিনি একা মা, জীবনের কঠিন বাস্তবতা পার করে হাসি মুখে বাঁচার চেষ্টা করছেন। এতে সমালোচনার কিছু দেখি না।”
পরীমনি অবশ্য সবসময়ই সমালোচনার জবাব দিয়েছেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন,
“আমি যেমন, তেমনই আছি। মানুষ আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত বিচার করবে, কিন্তু আমি নিজের সুখের জায়গা থেকে সরব না।”
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে পরীমনি এমন এক নাম, যিনি নিজের উপস্থিতি দিয়েই ভক্তদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে জানেন। সিনেমা থেকে সাময়িক বিরতি নিলেও, তার জনপ্রিয়তা বা বিতর্ক—দুটোই আজও সমান তালে চলছে।
ভিডিওটি নিয়ে তৈরি হওয়া এই নতুন বিতর্ক আবারও প্রমাণ করল—পরীমনিকে ভালোবাসুন বা ঘৃণা করুন, তাকে উপেক্ষা করা যায় না।