মানিকগঞ্জে তারাসিমা কারখানায় শ্রীলঙ্কার নাগরিক (সিওও) কর্তৃক সরকারি কর্মকর্তা (এলজিইডি) কে লাঞ্ছনার ঘটনা ধামাচাপার অভিযোগ

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় অবস্থিত পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তারাসিমা অ্যাপারেলস লিমিটেডে এক শ্রীলঙ্কান নাগরিক কর্তৃক সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শাশাংকা জয়া উইকরমা, যিনি কারখানাটির প্রোডাকশন সিওও (Chief Operating Officer) হিসেবে কর্মরত।

ধামাচাপার অভিযোগ সূত্র জানায়, ঘটনার পর শাশাংকা জয়া উইকরমাকে রক্ষা করার জন্য তারাসিমা অ্যাপারেলস লিমিটেডের অজ্ঞাতনামা দুই কর্মকর্তা সক্রিয়ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁরা শাশাংকা জয়ার সঙ্গে নিয়ে গত সোমবার ২৭ অক্টোবর জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দপ্তরে গিয়ে ঘটনাটি মিটমাটের চেষ্টা করেন।

গত সোমবার তাদেরকে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের সামনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অভিযুক্ত শ্রীলঙ্কান নাগরিক সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। পরে রাতে অজ্ঞাত নাম্বার থেকে ঢাকার সাংবাদিকের মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তদবির চালান।

সম্প্রতি ঢাকা–আরিচা মহাসড়কের নয়াডিঙ্গি এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের কাজে তারাসিমা অ্যাপারেলস লিমিটেডের পানি নিষ্কাশন ও পরিশোধন পাইপলাইন স্থানান্তরের প্রয়োজন হয়। এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি), সাটুরিয়া বরাবর আবেদন করেন।

লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপসহকারী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল আলিম পরিদর্শনের জন্য কারখানায় গেলে সেখানে উপস্থিত হন শাশাংকা জয়া উইকরমা। তিনি সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে অশালীন, রূঢ় ও আপত্তিকর ভাষায় কথা বলেন। একপর্যায়ে শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ করে ওই কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন। এমনকি তাঁর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে কারখানা থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, শাশাংকা জয়া উইকরমা কুমিল্লার বারিদি গার্মেন্টস লিমিটেডের ওয়ার্ক পারমিটে বাংলাদেশে এসেছেন, কিন্তু তিনি বর্তমানে বিটিপি গ্রুপের তারাসিমা অ্যাপারেলস লিমিটেডে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে প্রোডাকশন (সিওও) হিসেবে কর্মরত। ফলে তাঁর ওয়ার্ক পারমিটের বৈধতা ও চাকরির অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

একটি ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, অভিযুক্ত শ্রীলঙ্কান নাগরিক শাশাংকা জয়া উইকরমা ও তাঁর সাথে দুই সহযোগীকে নিয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ের গেটে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইকবাল হোসেন বিষয়টি অবগত হয়েছেন এবং বলেন—

“ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি থানায় হস্তান্তর করে খতিয়ে দেখা হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *