সুষ্ঠু নির্বাচনই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের ভবিষ্য: সিইসি

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:

বাংলাদেশ বর্তমানে এক সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি মনে করেন, দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার ওপর। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সততা, দক্ষতা এবং পেশাদারিত্বই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ কোন পথে এগোবে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আনসার-ভিডিপির সদস্যদের ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া এবং চতুর্থ ধাপের আনসার কোম্পানি-প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারীদের নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা বজায় রাখার বিষয়ে প্রস্তুত করার কাজ চলছে।

সিইসি বলেন, “ভোটের দিন থেকে শুরু করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ যেন সুষ্ঠু হয়, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা প্রচলিত ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছি। চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়েই আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের চাপের বাইরে রেখে শুধু গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারকে সামনে রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে।”

তিনি আরও জানান, এবারকার জাতীয় নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করবেন, যার মধ্যে আছেন প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যরা। যারা কারাগারে রয়েছেন এবং যারা প্রবাসে আছেন, তাদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে তাঁদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আসন্ন নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর অপব্যবহার করে বিভ্রান্তি ও অরাজকতা সৃষ্টি করা হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন সিইসি। তিনি এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, “দুষ্টচক্র এআইয়ের অপব্যবহার করে ভুয়া তথ্য ছড়াতে পারে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ধরনের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। জনগণকেও অনুরোধ করছি যাচাই-বাছাই করে তথ্য গ্রহণ ও প্রচার করার জন্য।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করার অন্যতম ক্ষেত্র। এবার চ্যালেঞ্জ আরও বেশি। এজন্য আনসার ও ভিডিপির সদস্যদের প্রশিক্ষণ আরও জোরদার করা হয়েছে, যাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারে।”

তিনি জানান, এবারকার নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ আনসার সদস্য মোতায়েন হবে। নির্বাচনী দায়িত্বের জন্য গত এক বছরে নতুন করে এক লাখ ৪৫ হাজার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বাহিনীতে, যা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে নিযুক্ত থাকবে।

সামগ্রিকভাবে অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় প্রযুক্তি, মানবসম্পদ এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা সমন্বিতভাবে উন্নত করা হচ্ছে, যাতে ভোটারদের আস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *