পুলিশ অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাশেদুল ইসলাম লোহাগাড়া থানার ইতিহাসের অংশ

কামরুল ইসলাম:

চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে সফল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন ওসি রাশেদুল ইসলাম । তার দুঃসাহসী অভিযানে চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানায় ফিরে পায় প্রায় দু’হাজার কোটি টাকার ভ‚মিসম্পদ ও রাজস্ব। বাংলাদেশের প্রশাসনে পুলিশ অফিসার ইনচার্জ ওসি রাশেদুল এমন এক ব্যক্তিত্ব, যার সততা, সাহসিকতা, কর্মদক্ষতা এবং দেশপ্রেম অতুলনীয়। তাকে নিয়ে লোহাগাড়া থানার জনসাধারণ গর্ববোধ করে। এমন একজন প্রচন্ড দেশপ্রেমিক ও সৎ অফিসার বাংলাদেশের জন্য অনন্য সম্পদ।
২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানায় এক বিংশশতাব্দীর প্রতিষ্ঠাবার্ষীকি । এ দিবস উপলক্ষে তাকে বিভিন্ন গৌরবময় কাজের প্রশংসা করছেন জনগণ । আমি যখন চট্টগ্রাম লোহাগাড়ায় সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করেছি, তখন তাকে দেখেছি কী দুর্দান্ত সাহস নিয়ে তিনি ভূমিদস্যু, অপরাধী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। উপরের মহলের অন্যায় চাপ, হুমকি কিংবা দুর্নীতিবাজদের রক্তচক্ষুকে তিনি পরোয়া করতেন না। ওসি হিসেবে লোহাগাড়া থানার ইতিহাসে এমন পুলিশ অফিসার ইনচার্জ দুর্লভ।
ওসি রাশেদুল ইসলাম এক কিংবদন্তি, হাজার হাজার সফল অভিযানের তিনি মহানায়ক। এত দুঃসাহসী ও আপসহীন অভিযান আমার চোখে পড়েনি। তার অতি স্বাধীনচেতা ভ‚মিকার কারণে তিনি বহু অসাধ্য সাধন করেছেন। চট্টগ্রাম লোহাগাড়াকে তিনি তার একক ভ‚মিকায় অসাধারণ উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। পদ-পদবি বিবেচনায় একজন পুলিশ অফিসার ইনচার্জ অথচ সমগ্র লোহাগাড়াজুড়ে মোঃ রাশেদুল ইসলাম সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং মাদক কারবারিদের জন্য এক আতংক। তার দুঃসাহসী অভিযানে চট্টগ্রাম লোহাগাড়া ফিরে পায় প্রায় দু’হাজার কোটি টাকার ভূমিসম্পদ ও রাজস্ব।
রাত-দিন ক্লান্তিহীনভাবে তাকে দেখা যেতো লোহাগাড়া স্থলসীমায়। অতি প্রত্যূষে নেমে পড়তেন পরিবেশ দূষণকারী, শুল্ক ফাঁকি দেয়া অথবা আইন লঙ্ঘনকারী দেশি-বিদেশি শত শত সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং মাদক কারবারি আটক করে ফেলতে। গভীর রাতে বা প্রচন্ড ঝড়-তুফানের মধ্যেও অভিযান চালাতেন। বিশাল বুলডোজার নিয়ে অবৈধ বহুতল ভবন, ডকইয়ার্ড, গোডাউন কিংবা নদীপাড়ের অবৈধ স্থাপনা মুহূর্তে ভেঙে ফেলতেন। কারও সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতেন না।
সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা বন্ধের মধ্যেও তার অভিযানের বিরতি ছিল না। এভাবে উদ্ধার করা বহু জমি চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার উন্নয়নে ও সম্প্রসারণে কাজে লেগেছে। তার অসীম সাহসী ব্যক্তিত্বের কাছে সন্ত্রাসী ও ভ‚মিদস্যুরা দুর্বল হয়ে যেতো। রাডারের মতো লোহাগাড়া থানাকে পাহারা দিয়ে রাখতেন। তার পেছনে অনেক ভয়ংকর শত্রু ছিল, অনেক হুমকি ছিল; কিন্তু কখনও মৃত্যুভয়ে ভীত ছিলেন না।
শুধু চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার নয়, ইউনিয়ন জুড়ে তার অভিযানের ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। খাদ্যে ও ওষুধে ভেজাল, গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ চুরি, অবৈধ যান চলাচল, পরিবেশ দূষণ, সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ, অবৈধ পণ্য মজুত, অনৈতিক ব্যবসা, হাসপাতাল-ক্লিনিকে অপচিকিৎসাসহ অসংখ্য বড় বড় দুর্নীতি ও অপরাধের মূলোৎপাটন করেছেন ওসি রাশেদুল ইসলাম ।
চট্টগ্রামে শক্ত হাতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য টাইগার’ নামে অভিহিত করতেন তাকে। বহু বড় বড় ব্যবসায়ী তার হাতে গ্রেপ্তার হয়। শত শত কোটি টাকার জমি উদ্ধার করেছেন। এছাড়া দুই পাড়ে বড় বড় অবৈধ বালু মহল ভেঙে দিয়েছিলেন। তাকে লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে বড় বড় দুর্নীতি ধরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *