নরসিংদী পলাশ উপজেলাকে যুগোপযোগী করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি- শরিফুল হক

আনোয়ার হোসেন আনু ,পলাশ নরসিংদী:

ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় ৯৪.৪০ বর্গকিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট নরসিংদী পলাশ উপজেলা ৪টি ইউনিয়ন পরিষদ ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত । এর মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৮১১ জন। পলাশ উপজেলায় দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্পনগরী। এখানে রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তর ইউরিয়া সার কারখানা, ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, বাংলাদেশ জুটমিল, জনতা জুটমিল, প্রাণ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি, স্যামরি ডাইং, পিএইচপি ইস্পাত, ওমেরা পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি শিল্প কারখানা। ২০১১ সালে প্রথম বারের মতো ঘোড়াশাল পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে আমি ৩৮ হাজার ৭শ’ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হই। পরপর দু’বার নির্বাচিত হয়ে মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি,

সাধারণ জনগন আলহাজ্ব শরীফুল হক শরিফকে এবার পলাশ উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চায়,
তারি ধারাবাহিকতায় পলাশবাসীর আশ্বাস ও বিশ্বাস ভালবাসা নিয়ে শরিফুল হক শরীফ দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে নেমেছেন,

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হয় ২৪ এপ্রিল। এর আগে বেলা ১২ টায় নির্বাচন কমিশনার এর কার্যালয় থেকে প্রতীক বরাদ্দের গেজেট সংগ্রহ করেন।
এর পর থেকেই নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দোয়াত কলম মার্কা সম্বলিত ফেস্টুন হাতে ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপজেলার বাসস্ট্যান্ড চত্বরে জড়ো হতে থাকে। ২৪ এপ্রিল বিকেল ৫ টায় উক্ত পথসভায় উপস্থিত হন নরসিংদী ০২ (পলাশ) নির্বাচনী এলাকার সাবেক সফল সংসদ সদস্য ও পলাশ উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব কামরুল আশরাফ খান (পোটন)। সাবেক সফল সংসদ সদস্য কে পেয়ে সকল নেতাকর্মীরা উল্লাসে মেতে উঠেন। মুহূর্তের মধ্যেই দোয়াত কলম মার্কার স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে বাসস্ট্যান্ড চত্বর।
আলহাজ্ব শরিফুল হক শরিফ বলেন আমি একজন পরীক্ষিত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করায় তৃণমূল আওয়ামীলীগের সকল নেতা কর্মীদের ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো বলেন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দোয়াত কলম মার্কা কে নির্বাচিত করে আমাদের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ রাখবো ইনশাআল্লাহ। তিনি নির্বাচন কে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার সহিংসতায় না জড়ানোর জন্য নেতা কর্মীদের অনুরুদ করেন। এ সময় তিনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কারিউল্লাহ সরকার এর বই মার্কা ও সেলিনা আক্তার এর কলস মার্কায় সকলের কাছে দোয়া ও ভোট কামনা করেন।

তিনি প্রত্যেক নাগরিকসেবা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করেছেন। রাস্তাঘাট নির্মাণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, গ্রামে রাস্তার পাশে সড়কবাতি স্থাপন, আধুনিক পৌর অডিটরিয়াম, কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঈদগাহ নির্মাণসহ চোখে পড়ার মতো বেশকিছু উন্নয়ন কাজ করেছেন।

আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ২০১১ সালে তৎকালীন পলাশের এমপি ডাঃ আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপের একান্ত প্রচেষ্টায় সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা নিষ্পত্তির মাধ্যমে ঘোড়াশালে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর অবহেলিত পলাশ ঘোরাশালের জলাবদ্ধতা ও অন্ধকার দূরীকরণে কাজ শুরু করি। গত বছর গুলোতে যে সকল উন্নয়ন কাজ করেছি তার সুফল এখন পলাশ ঘোড়াশাল বাসী ভোগ করছে। আগে সামান্য বৃষ্টি হলেই মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারত না। অধিকাংশ রাস্তা ছিল কাঁচা। পৌর এলাকার পথগুলো ছিল অন্ধকারময়। জনগণ ছিল নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত। ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা ছিল না। নির্বাচিত হয়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি ও ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য ডাম্পিং এর জায়গা ক্রয় করেছি। এডিপি, ইউজিপ-২ সহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থায়নে ঘোড়াশাল পৌরসভার রাস্তাঘাট নির্মাণ, প্রতিটি ওয়ার্ডে সড়কবাতির ব্যবস্থা করেছি। আমার স্বপ্ন ছিল তাই রূপান্তর করতে চেষ্টা করেছি। পলাশ ঘোড়াশাল এর জন্য একটি আধুনিক পৌর অডিটরিয়াম,  কমিউনিটি সেন্টার, একটি পৌর ঈদগাহ, একটি আধুনিক পৌর মসজিদ নির্মাণ করা। বিএমডিএফের অর্থায়নে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার লোক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট অডিটরিয়াম নির্মাণ করেছি। পলাশ ঘোড়াশাল এর সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য ঘোড়াশাল চত্বর এবং পলাশ বাসস্ট্যান্ড চত্বর নির্মাণ করা হয়েছে। রেলস্টেশনের পাশে থাকা ঝোঁপঝাড় পরিষ্কার করে ফুলের বাগান করে শহরের প্রবেশমুখে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করার কাজ করেছি এবং উল্ল্যেখযোগ্য ৬টি ড্রেনসহ রাস্তা করা হয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে শরিফুল হক বলেন যে, দুর্নীতিবাজদের স্থান আমার ও আমার এমপির কাছে নেই। পলাশের এমপি ডাঃ আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপের নির্দেশে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স। ঘোড়াশাল পলাশবাসিকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করেছি। মাদক একটি সামাজিক ব্যাধি। একদিনে এটাকে নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে আগের চেয়ে ৮০% নির্মূল করা হয়েছে।

সাবেক মেয়র শরিফুল হক শরিফ দায়িত্বে থাকা কালিন সময়ের কথা বলতে গিয়ে বলেন ঘোড়াশাল পৌরসভায় এখনো অনেক নাগরিক আছে যারা ইউনিয়ন থেকে পৌরসভা হওয়ার পরও পৌর কর দেয়নি। আসলে সরকারিভাবে যা ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম ট্যাক্স ধরা হয়েছে। নাগরিক সুবিধা পেতে হলে অবশ্যই নির্ধারিত হারে ট্যাক্স দিতে হবে। শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্পর্কে শরিফুল হক বলেন আমি ততকালীন সময়ে নির্বাচিত হয়ে পৌরসভার যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো বিল্ডিং ছিল না সেখানে ভবন নির্মাণ করেছি। মেয়েরা যাতে নিরাপদে স্কুল-কলেজে যেতে পারে, ইভটিজিংয়ের শিকার না হয় সে লক্ষ্যে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বিশেষভাবে দিকনির্দেশনা দেয়া আছে। এলাকার চিহ্নিত বখাটেদের ব্যাপারে তাদের পরিবার ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেছি। ছেলে মেয়েরা যাতে নির্বিঘ্নে স্কুলে যেতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি এখনো।
আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ , মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মধ্যম আয়ের দেশ ও উন্নত দেশ হিসাবে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয়ে পলাশ উপজেলাকে যুগোপযোগী করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *