
ঢাকা জেলা প্রতিনিধি :
ঢাকার সাভারে পলাতক এক জামায়েত নেতার তথ্য চাওয়ায় দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি মোঃ ওমর ফারুককে জেলে পাঠানোর হুমকির অভিযোগ উঠেছে পোশাক কারখানা একেএইচ নিটিং এন্ড ডাইং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে । এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী ব্যাবস্থাপক (নিরাপত্তা) রাফীও উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে অসদাচরণ করে দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেন। এঘটনায় শনিবার (২৪ মে) রাতে সাভার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-১৮০২) দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোঃ ওমর ফারুক।
এর আগে মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে ফুলবাড়ীয়া বাজার এলাকার একেএইচ নিটিং এন্ড ডাইং লিমিটেড কারখানায় আত্মগোপনে থাকা ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী আবুল বাশারের তথ্য চাইতে গেলে এ হুমকি দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, সাংবাদিককে হুমকির বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এবিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ীর নাম আবুল কাশেম। তিনি একেএইচ গ্ৰুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সাংবাদিককে হুমকির বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
তবে দেশ রূপান্তরের সাংবাদিক ওমর ফারুকের সাথে হওয়া ৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, সাভারের চাপাইন এলাকার হাসান মন্ডল নামে এক ব্যক্তি ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় জামায়াত নেতা আবুল বাশার একেএইচ নিটিং এন্ড ডায়িং কারখানায় চাকুরির সুবাদে তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের স্থানীয় বিএনপি ও জামায়ত নেতাদের নিয়ে কারখানাটির ভিতরে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি তার নিজ বাসভবনে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আবুল বাশার ও আবুল খায়ের দুই ভাই নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডের মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী। বর্তমানে তারা সাভারে এসে আত্মগোপন করেছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত একেএইচ নিটিং এন্ড ডায়িং লিমিটেড কারখানার সামনে গেলে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক রাফি আমাকে এবং আমার সহকর্মী দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক হুমায়ুন কবির, এশিয়ান টিভির সাংবাদিক দেওয়ান ইমনসহ অন্য সাংবাদিকদের সাথে অসদাচরণ ও দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থপনা পরিচালক মোঃ আবুল কাশেমের কাছে জানতে চাইলে তিনিও মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেন এবং নিজেকে ক্ষমতাবান দাবি করে সাভার থানার ওসির কাছ থেকে তার সম্পর্কে জেনে নিতে বলেন। এসব কথপোকথনের অডিও রেকর্ডটি আমার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এ ঘটনায় সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুস সাকিব ও সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ আচার্য্য বলেন, তথ্য জানতে চেয়ে প্রশ্ন করার কারণে সাংবাদিককে হুমকি, ভয় দেখানো এবং হয়রানি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সাভার প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মওদুদ কামাল বলেন, সাংবাদিককে হুমকির ঘটনায় দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়েরি (জিডি) তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।