
মিথুন কর্মকার :
ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে বরগুনার তিনটি প্রধান নদী বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীর পানি স্বাভাবিক উচ্চতার থেকে ৩ ফুট বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে। অতি জোয়ারের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পায়রা নদী ও বিষখালী নদীতে অবস্থিত দুটি ফেরিঘাট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন ও মানুষ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে বরগুনা বিষখালী,পায়রা ও বলেশ্বর নদীর পানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় শনিবার ৩ ফুট বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
জোয়ারের প্রভাবে বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী, বাওয়ালকার, মাঝেরচর, ডালভাঙা। তালতলি উপজেলার নিশানবাড়িয়া, ফকির হাট, সোনাকাটা, নিদ্রাসকিনা, তেতুলবাড়িয়া, আশার চর, নলবুনিয়া, তালুকদারপাড়া, চরপাড়া, গাবতলী, মৌপাড়া, ছোটবগী। আমতলী উপজেলার ঘোপখালী, বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম আমতলী, ফেরিঘাট, পুরাতন লঞ্চঘাট, আমুয়ার চর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার বাসিন্দারা।
সরেজমিনে বরগুনা সদর উপজেলার দুটি ফেরিঘাট ঘুরে দেখা গেছে, পায়রা নদীর ফেরির গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। মানুষ হাঁটু পরিমাণ পানি ডিঙিয়ে সড়কে উঠছে। যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। বিষখালী নদীতেও জোয়ারের পানিতে বড়ইতলা-বাইনচককি ফেরিঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দুই প্রান্তে যানবাহন আটকা পড়েছে, এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
এ ছাড়া খেয়া পারাপারে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছে। বড়ইতলা বাইনচটকি ফেরিঘাটের খেয়া চালক শহিদুল ইসলাম বলেন, গত তিন দিন ধরে নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বাড়ছে এতে দুর্ভোগে পড়েছে খেয়া পারাপারের যাত্রীরা। ছাত্রীদের ওঠাতে নামাতে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফেরিঘাটের রাস্তা যদি উঁচু করে নির্মাণ করা হতো তাহলে জোয়ারের পানিতে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।
তালতলির গাবতলী গ্রামের ধলু মিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল জোঁতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে পায়রা নদী সংলগ্ন চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চরে বসবাসরত মানুষেরা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
আমতলীর পৌর শহরের আমুয়ার চর গ্রামের আম্বিয়া বেগম বলেন, জোয়ারের পানিতে ঘর তলিয়ে গেছে।
জোয়ারের পানিতে ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে। এতে গ্যাংওয়ে দিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত ফেরির গ্যাংওয়ে সংস্কার করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহতাব হোসেন বলেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ শনিবার জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম করেনি।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে বরগুনা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ সভার মাধ্যমে আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করব।