ফেসবুকে ভাইরাল মৃত হরিণের ছবি ‘নিঝুম দ্বীপের’ গুজব বলছে বনবিভাগ

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে লন্ডভন্ড দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া। নিঝুম দ্বীপসহ হাতিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।‌ এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে মৃত হরিণের ছবি। যা দেখে অনেকেই দাবি করছেন ছবিগুলো ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত নিঝুম দ্বীপের।

তবে ভাইরাল হওয়া ছবিটি আদৌ নিঝুম দ্বীপের কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৮ মে) বনবিভাগের সঙ্গে কথা হয় । বনবিভাগ দাবি করছে ছবিটি নিঝুম দ্বীপের নয়। এমনকি হরিণ ভেসে যাওয়ার তথ্যটিও নিশ্চিত নয়।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের ফলে কয়েক দফায় নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে জোয়ারে ভেসে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসহ অর্ধকোটি টাকার মাছের ঘের ভেসে গেছে। মূলত বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন এভাবেই প্লাবিত হয়। এরই মাঝে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া মৃত হরিণের ছবি দেখে সবাই ধারণা করছেন, নিঝুম দ্বীপের অসংখ্য হরিণ মারা ও ভেসে গেছে।

মো. মোজাহিদুল ইসলাম সোহেল নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মৃত হরিণ দুইটির ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আমাদের নিঝুম দ্বীপ, আমাদের হরিণ।’

তাসিব নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটি নিজের টাইমলাইনে দিয়ে ক্যাপশন দিয়েছেন ‘আহ নিঝুমদ্বীপের হরিণ’। কিন্তু তারা কেউই ছবির উৎস সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

এদিকে হরিণ ভেসে যাওয়া নিয়ে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কেফায়েত হোসেন বলেন, এমন ঘটনা আমার চোখে পড়েনি। কোথাও হরিণ মরেছে বলে আমার জানা নেই। তবে জোয়ার হয়েছে সত্য। মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিঝুম দ্বীপ।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন বলেন, হরিণ ভেসে যাওয়ার ঘটনা নিঝুম দ্বীপে ঘটেনি। যে বা যারা ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছেন সেটা নিঝুম দ্বীপের না।

বিষয়টিকে গুজব বলছেন উপকূলীয় বনবিভাগ হাতিয়ার জাহাজমারা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম সাইফুর রহমানও। তিনি বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ে সারাদেশে প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিঝুম দ্বীপেও জোয়ার হয়েছে। তবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে উঁচু স্থান বা গাছের ডালে উঠে হরিণ নিজেকে রক্ষা করে। প্রাকৃতিকভাবে আল্লাহ তাদের রক্ষা করে। হরিণ ভেসে যাওয়ার ঘটনা সত্য কিনা নিশ্চিত না। তবে মৃত হরিণের ভাইরাল ছবিটি নিঝুমদ্বীপের নয়, এটা গুজব।

উপকূলীয় বনবিভাগের নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ বলেন, আমাদের রেঞ্জ কর্মকর্তা জানিয়েছে ছবিটি নিঝুম দ্বীপের নয়। তবে আমরা চিত্রগ্রাহককে খুঁজছি। তাহলেই সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। তথ্যটি নিঝুম দ্বীপের কিনা জানতে আমাদের রিপোর্টিং করতে হবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *