ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত যাবে

স্টাফ রিপোর্টার:

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত যাবে। এটাকে কি ট্রানজিট বলে? এটাকে বলে করিডোর। তিনি বলেন, ‘যে ট্রেনকে করিডোর দেওয়া হয়েছে, সেখানে যদি অস্ত্র যায়? সেনাবাহিনী যায়? আপনি তল্লাশি করতে পারবেন? বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত এখন সেভেন সিস্টার্সের রাস্তা করতে চায়।’

বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘আজিজ-বেনজির-মতিউরদের অবিশ্বাস্য দুর্নীতি, মরিচের দাম বিস্ময়কর বৃদ্ধি ও প্রধানমন্ত্রীর দাসখত দেওয়ার ভারত সফর’ শীর্ষক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এবারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সরকার ভারতের কাছে সবকিছু সমর্পণ করে এসেছেন। ৭ জানুয়ারি ভোট করতে পারতো? ২০১৪ সালে ভোট করতে পারতো? পারতো না। ভারত নাক গলিয়েছে তাই পেরেছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার কী বাধ্যবাধকতা ছিল যে, তাকে ১৫ দিনের মধ্যে আবার ভারত যেতে হলো? কিছু পাওয়ার জন্যে? তিনি বলেছেন, যা পেয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের প্রধান দাবি কী ছিল, যে ভারত আমাদের পানি দেয় না। ৫৪টি নদী আছে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকেছে। যখন কোনও নদীর পানি আরেকটা দেশে ঢুকবে তখন তা অবারিত থাকবে, কেউ বাধা দিতে পারবে না। ভারত গঙ্গায় বাঁধ দিয়েছে— যেদিক দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে। তিস্তায় বাঁধ দিয়েছে, যেখান দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে। তারপরই পানি আটকে গেলো। তিস্তার পানি আমার প্রাপ্য— এটা আমাকে দিতে হবে। এই কথা কি আপনারা বলেছেন? বড় বড় যে কথা বলেন, এগুলো নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে? আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিস্তার পানির দাবি ছেড়ে দিয়ে এসেছেন।’

মান্না বলেন, ‘মতিউর যেদিন গেলো, সেদিনের আগ পর্যন্ত তার নামে কোনও মামলা, নিষেধাজ্ঞা নেই। যাওয়ার পরে বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দিলো। সবগুলো আওয়ামী লীগ করে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই তো চুরি করে, ডাকাতি করে প্রধানমন্ত্রী। চোর, ডাকাত ছাড়া তো প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারে না। আবার বলে, এত লোভ মানুষের। আপনার আশপাশে যারা থাকে, তাদের লোভ নেই?’

বাংলাদেশ এখন বিশ্বে একটা লুটপাটকারীদের দেশে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘এমপি আনার মানুষ খুন করেছিল, তাও তাকে আওয়ামী লীগ নমিনেশন দিয়েছিল। ইন্টারপোল তাকে লাল তালিকাভুক্ত করেছিল। আওয়ামী লীগ এখন ধর্ষণ ও লুট করে যারা, তাদের দল। আওয়ামী লীগ একসময় স্বাধীনতার লড়াই করেছিল, তাও ভালোমতো করে নাই। তাদের নেতারা কলকাতার বড় বড় হোটেলে গিয়ে লুকিয়ে ছিল।’

তিনি বলেন, ‘একজন গরিব কৃষক ৩০ হাজার টাকা লোন নিয়ে পরিশোধ করতে না পারলে তাকে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ হাজার কোটি টাকা লুট করে, কেউ দেখলো না? আজিজ, বেনজিরের পাসপোর্ট আটকে রাখা হলো না কেন? সরকার এদের রক্ষা করছে।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘মরিচের দাম ঈদের আগে ৪০০ হয়েছিল। শেখ হাসিনার আমলে মরিচ, পেঁয়াজের এতই ঝাল, অথচ প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়ে বেড়াচ্ছেন— আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, তখন দেশের মানুষ কিছু পায়। আজিজ, বেনজিররা পায়। যারা রিকশা, ভ্যান চালায়— তারা কিছু পায় না। জিনিসের দাম এতই বেশি যে, পকেটভর্তি টাকা নিয়ে গেলেও বাজারের ব্যাগ ভরে না।’

এ সময় মানববন্ধনে নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *