নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর কদমতলী জাপানি বাজার এলাকার একটি বাসা থেকে কুলসুম ওরফে স্বর্ণালী (২২) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
কুলসুম নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার মিজমিজি এলাকার মো. নাসিরের মেয়ে। তার মা তাসলিমা বেগম জানান, টিকটকের মাধ্যমে ফুয়াদ নামে এক ছেলের সঙ্গে কুলসুমের পরিচয় হয়। সেখান থেকে প্রেমের সম্পর্ক হলে নয়মাস আগে পালিয়ে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর থেকে কোথায় থাকতেন তাও জানাননি পরিবারকে। মাঝেমধ্যে কুলসুমকে নির্যাতন করতেন ফুয়াদ।
তাসলিমা আরও জানান, বৃহস্পতিবার স্বামীর বাসা থেকে পালিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে বাবাবাড়িতে চলে আসেন কুলসুম। তখন তার ওপর নির্যাতনের সব কিছু জানান। কিন্তু নিরুপায় কুলসুম শুক্রবার সকালে আবার ঢাকায় স্বামীর কাছে চলে যান। কুলসুম বাবাবাড়ি যাওয়ার বিষয়টি জানায় ফুয়াদ রোববার রাত আনুমানিক সাড়ে বারোটায় শাশুড়িকে ফোন করে রাগারাগি ও গালিগালাজ করেন। কুলসুমকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। সবশেষ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ফোন করে জানায়, কুলসুম মারা গেছেন।
সুরতহাল প্রতিবেদনে কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুন নাহার জানান, গত ছয় মাস যাবত জাপানি বাজার ৯ নম্বর রোডের ফ্রেন্ডশিপ টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাটে স্বামী ফুয়াদের সঙ্গে থাকতেন কুলসুম। তবে বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না জানতে পারি । প্রায়ই ঝগড়া হতো। এর জেরে সোমবার বাসার গেস্ট রুমে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন কুলসুম। খবর পেয়ে বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য যে, প্রাথমিক তদন্তে ভাড়া বাসায় মদের সদৃশ্য বোতল ও গাঁজা সেবনের বোতল পাওয়া গিয়েছে যা থেকে মদের টাটকা গন্ধ বের হচ্ছিল। ধারণা করা হয় কুলসুমের স্বামী মাদক আসক্ত ছিল।কুলসুমের স্বামী ঘটনার পরের দিন থেকে পলাতক তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পাশের প্রতিবেশী কাছ থেকে জানা যায়, কুলসুমের স্বামী ৫/৬ জন বন্ধুকে নিয়ে প্রায়ই
বাসায় আসতো,গান-বাজনা ও মাঝে মাঝে হইহুল্লোড়ের শব্দ পাওয়া যেত । প্রত্যক্ষদর্শী এক প্রতিবেশী নিজের পরিচয় গোপন করার শর্তে বলেন, কুলসুমের স্বামী ফুয়াদ ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।পুলিশ যেয়ে দেখে মরদেহ ওড়না কেটে নামানো । বাড়ির কেয়ারটেকার কে জিজ্ঞেস করলে, এ বিষয়ে তথ্য দিতে অস্বীকার করে যা খুবই রহস্যজনক!!!
সুরতহাল প্রতিবেদনে এসআই কামরুন নাহার আরও উল্লেখ করেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা জানা গেলেও বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।