কামরুল ইসলাম:
মিলাদ-কিয়ামের দ্বন্ধে দীর্ঘ প্রায় ১৫ মাস ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে ফটিকছড়ির নানুপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড়ের ঢালকাটা গ্রামের চুরানের বাড়ি মেহের আলী জামে মসজিদ। ফলে মসজিদে আজান-বাতি কিছুই নেই, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ বন্ধ রয়েছে ধর্মীয় কার্যক্রম।
মোট জনসখ্যার প্রায় ৯১ ভাগেরও বেশি মুসলিম অধ্যুষিত একটি দেশে পাঞ্জেগানা জুমা মসজিদ বন্ধ থাকার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের এবং বিষয়টি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে ফটিকছড়ির জন্য।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, জনবহুল ঢালকাটা গ্রামে পিচঢালা সড়কের খুব কাছে মসজিদটির অবস্থান। মসজিদ ঘাটের সাথে বড় পুকুর। মসজিদের প্রধান ফটকের গ্রিলের সাথে আটকানো তালাটি দূর থেকে দেখা যাচ্ছে। মসজিদের ভিতরে ধুলো ময়লায় একাকার হয়ে আছে। মসজিদের বারান্দার পাশে আর গ্রিলের জানালায় ঝোপঝাড়, আগাছায় চেয়ে গেছে। প্রবেশ দ্বারে দেখা দিয়েছে শেওলার আস্তরণ। দীর্ঘদিনের তালাবদ্ধ মসজিদটি যেন বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, অনেক দিনের পুরাতন মেহের আলী জামে মসজিদে কওমি-সুন্নি মতাদর্শের মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতেন। এতে মিলাদ-কিয়াম নিয়ে উনাদের মধ্যে মতবিরোধ ছিলো। ২০২২ সালে মতবিরোধ সংঘাতে রূপ নেয়। সংঘাত এড়াতে কিছুদিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে মুসল্লিরা মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছিলো। শেষতক ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সে সময়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাথে নিয়ে মসজিদটি তালাবদ্ধ করেন। বলা হয়েছিলো সুষ্ঠু সমাধারে পর তালা খোলা হবে। সে থেকে অধ্যাবধি মসজিদটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, মনটা আমাদের হু হু করে কাঁদে। কতোদিন ধরে মসজিদের আজান শুনিনা। সন্ধ্যার পর মসজিদ ঘাটাটি ভূতুড়ে এলাকায় পরিণত হয়। এমপি আমাদের বাড়ির মেয়ে। উনার কাছে বিনীত অনুরোধ খুব সহসা যেন মেহের আলী জামে মসজিদে আজান-নামাজের ব্যবস্থা করে দেন।
নানুপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুন নবী রোশন জানান, নানান ঝামেলায় মসজিদটি তালাবদ্ধ রয়েছে। খুব শীঘ্রই আমরা এ ব্যাপারে বসবো। এমপি দেশের বাইরে রয়েছেন উনি আসলে একটা সমাধান হবে।
ফটিকছড়ির ইউএনও মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, মসজিদটি বন্ধ রয়েছে সেটি কখনোই সুখকর বিষয় না। এটি একটি জটিল বিষয়। যেহেতু এটি এমপির এলাকা সেহেতু আমি বিষয়টি উনাকে জানিয়েছি। আশাকরি সমাধান হবে।