
মেহেদী হাসান লিটন:
বগুড়ায় রূপালী ব্যাংক মহাস্থান শাখা হতে ২ কোটি ৫৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৬ টাকা আত্মসাত ও প্রতারণার মামলার পৃথক রায়ে ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপক, অফিসার এবং ব্যবসায়ীসহ ৬ জনের ১০ বছর এবং ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার ১৪ জুলাই বগুড়ার স্পেশাল জজ মোঃ শহিদুল্লাহ্ এই মামলার রায় প্রদান করেন। রায়ে অভিযুক্ত সোনাতলা উপজেলার পাতিলকুড়া বালুয়াহাটের মন্তেজার রহমানের ছেলে রূপালী ব্যাংক বগুড়ার মহাস্থান শাখার প্রক্তন ব্যবস্থাপক (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্তকৃত) মোঃ জোবায়েনুর রহমানকে ব্যাংকের ওই টাকা আত্মসাতের রায়ে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড, জালিয়াতির দায়ে ১০ বছরের সশ্রম করাদন্ড, প্রতারনার দায়ে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা রাস্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ফৌজদারী কার্যবিদির ৩৮৬ ধারার বিধান মোতাবেক আসামির সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে ওই জরিমানার টাকা আদায় যোগ্য হবে মর্মে রায়ে বলা হয়েছে। এই মামলার আসামি নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুরে জালাল উদ্দিনের মেয়ে ও সাজিবুর রহমানের স্ত্রী ওই ব্যাংকের প্রাক্তন সিনিয়র অফিসার অভিযুক্ত ইসরাত জাহান, জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ রোডের প্রফেসর পাড়ার মৃত মোজাহার আলীর ছেলে ওই ব্যাংকের প্রাক্তন পিও মোঃ মাহতাব উদ্দিনকে ৫ বছর করে সশ্রম কারদন্ডাদেশ এবং বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানের মৃত কিনুর ছেলে মেসার্স আজমল ট্রেডার্সের প্রোপাইটর মোঃ আজমল হোসেন, মৃত আয়েত আলী আকন্দের ছেলে মেসার্স জাহিদ কনস্ট্রাকশনের প্রোপাইটর মোঃ জাহিদুর রহমান, গড় মহাস্থানের মৃত মোসলেম উদ্দিন আকন্দের ছেলে মেসার্স হোসেন ট্রেডার্সের প্রোপাইটর মোঃ মোশারফ হোসেনকে প্রতারনা করাসহ সহযোগিতা করার দায়ে তাদের প্রত্যেককে ৭ বছর করে সশ্রম করাদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। এই মামলার অপর আসামি ওই ব্যাংকের প্রাক্তন কর্মকর্তা কায়েদ আজম মামলা চলাকালে মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানাযায়, রূপালী ব্যাংক বগুড়ার মহাস্থান শাখায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোঃ জোবায়েনুর রহমান ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে প্রতারনা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ৬ টি পে-অর্ডারের মধ্যমে অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় ব্যাংক হতে ২ কোটি ৫৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৬ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। এব্যাপরে ব্যাংকের বগুড়া জোনাল অফিসের উপ মহাব্যবস্থাপক ও জোনাল ম্যানেজার সরদার মোহাঃ হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন বগুড়া জেলা কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক রবীন্দ্র নাথ চাকী ওই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি পরিচালনা করেন বাদি রাস্ট্র পক্ষে দুদকের পিপি এড. এস এম আবুল কালম আজাদ এবং আসামি পক্ষে এড.মোঃ আতাউর রহমান, এড. বিনয় কুমার ঘোষ রজত, এড. জিন্নুল হক, এড. আব্দুর রশিদ।