
সাঈদ মৃধা
ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের রেজায়ে রাব্বি নামে এক কর্মকর্তা। যিনি বিগত দিনে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবেই বাগিয়ে নিয়েছিলেন ফায়ার সার্ভিসের চাকরি। দেশে সদ্য সংঘঠিত ছাত্র-জনতার বিপ্লব ঠেকাতে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি মোটা অংকের অর্থ সহায়তার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়ে নিয়মিত সহযোগিতা করেছিলেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত থাকা রেজায়ে রাব্বি একসময়ের আওয়ামীলীগের দুর্ধর্ষ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অতি ঘনিষ্ঠজন হওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসে কোন সিনিয়র কর্মকর্তাকেও তোয়াক্কা করতেন না। বরং উল্টো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চাকরি খাওয়ার ভয় দেখাতেন। ছাত্রলীগের সাবেক ক্যাডার হিসেবে পরিচিত রাব্বি সম্পর্কে একটি বিশ্বস্ত সূত্র এমন তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গেল আগস্টে ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রাব্বিকে নতুন কর্মস্থলে বদলির আদেশ দেয়ার পর
থেকেই আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
সংশ্লিষ্ট অনেকেরই ধারণা আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ও ছাত্র-জনতার বিপ্লব ঠেকাতে তার গভীর সংশ্লিষ্টতার কারণে জনতার রোষানল থেকে বাঁচতেই পালিয়ে আছেন তিনি।
পলাতক ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বি নিজ এলাকা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার বিপ্লব ঠেকাতে স্থানীয় ছাত্রলীগ এর নেতাকর্মীদের অর্থ যোগানদাতা হিসাবে এই ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা সক্রিয় ছিলেন। স্থানীয় ছাত্রলীগ যাতে ছাত্র-জনতার বিপ্লব ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেয় সে ব্যাপারে তিনি নিয়মিত নির্দেশনা ও অর্থ যোগান দিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সময় ভয়াবহ গণহত্যায় তিনি নিবিড় ভাবে জড়িত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, রেজায়ে রাব্বি ফায়ারম্যানদের নিয়ে আনসার বাহিনীর মতো একটি বিপ্লব করার উদ্দেশ্যে আত্মগোপনে থেকেই তাদের সুসংঘঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি আওয়ামীলীগের হাই কমান্ড থেকে নির্দেশনা পেয়েছেন এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে যেহেতু বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক রেজায়ে রাব্বি। এর সুবাদে ঢাকাতে নিয়মিত রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট থাকতেন তিনি। কর্মস্থলে ঠিকমত দায়িত্ব পালন না করেই আওয়ামিলীগের বিভিন্ন মিছিল মিটিং চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকতেন বলে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে, ইতিপূর্বে স্টেশন অফিসার থাকাকালীন মাধবদী ফায়ার স্টেশনের খন্ডকালীন মহিলা ঝাড়ুদারকে রুমের ভিতর আটকে দিয়ে জোড় পূর্বক ধর্ষন করেন এর জন্য তৎকালিন ডিজি তাকে সাময়িক সাসপেন্ড করেন। পরর্বতীতে তার পিতা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা ও সু-উচ্চ সুপারিশ করিয়ে এবং ভুক্তভোগী মহিলাকে আর্থিক জরিমানা দিয়ে মামলা হইতে অব্যহতি নেন।
এসব বিষয়ে জানতে পলাতক ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রাব্বির মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেননি।
নিম্নে তার অপকর্মের কিছু কর্মকান্ড তুলে ধরা হইলঃ
নরসিংদীর মাধবদী বাজার এলাকায় সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী দিয়ে জোড় পূর্বক ডিজিকে ফোর্স করে নিজ ইচ্ছামত পোষ্টিং নেন। তার অত্যাচারে এলাকার ছোট বড় যত প্রতিষ্ঠান আছে প্রত্যেকটির নিকট হইতে দুই (০২) হইতে তিন (০৩) লক্ষ টাকার বিনিময়ে লাইন্সেস নবায়ন করেন বিভিন্ন আইন দেখিয়ে নইলে লাইন্সেস নবায়ন করেন না। এতে মাধবদী এলাকার ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে।
নিম্নে কিছু ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানের নাম তুলে ধরা হইলঃ
শাহি ডাইং, মুক্তাদির ডাইং, মাধবদী ডাইং, লাকী ডাইং, মোশারফ স্পিনিং মিল, মোবারক স্পিনিং মিল, লতিফ উইভিং, ফকির ডাইং, ওয়াজেদ স্পিনিং মিল, পাকিজা ও জজ ভূইয়া গ্রুপ।