মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর গুলিতে নিহত বাংলাদেশি, ৬০ জেলেকে অপহরণ

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:

 

বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলারে মিয়ানমারের নৌ বাহিনী গুলি চালিয়েছে। এতে মো. ওসমান নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন এবং দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় ৬০ জন মাঝি-মাল্লাসহ চারটি ফিশিং ট্রলার অপহরণ করে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী।

তিনি বলেন, মিয়ানমার নৌ বাহিনীর গুলিতে একজন জেলে নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছি। তবে মিয়ানমারের নৌ বাহিনী অপহৃত ৪০ থেকে ৫০ জন জেলেকে ট্রলারসহ বাংলাদেশের কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে। তারা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের জলসীমার দিকে রওনা হয়েছেন।

কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ট্রলার মালিকদের বরাতে জানা যায়, বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে মৌলভীর শিল নামের মোহনায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জেলে মো. ওসমান শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তাৎক্ষণিকভাবে গুলিবিদ্ধদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। নিহত ও আহতদের সবাই শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে বলে জানা গেছে।

অপহৃত চারটি ট্রলারের মালিকরা হলেন-মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ এবং তার ভাই আতাউল্লাহ, উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম। ট্রলারগুলোতে ৬০ জন মাঝি-মাল্লা ছিলেন।

ট্রলার মালিক সাইফুল জানান, বুধবার সাগরে মাছ ধরার সময় মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে গুলি চালায়। এতে তার ট্রলারের চারজন জেলে গুলিবিদ্ধ হন, যাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। এরপর পাঁচটি ট্রলারসহ মাঝি-মাল্লাদের ধরে মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার তার ট্রলারটি ছেড়ে দেওয়া হয় এবং নিহত ও আহত জেলেদের নিয়ে সেটি শাহপরীর দ্বীপের দিকে রওনা দেয়।

অপর ট্রলার মালিক মতিউর রহমান জানান, অপহৃত ট্রলারসহ মাঝি-মাল্লাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। নিহতকে নিয়ে ট্রলারটি ঘাটে পৌঁছালে বিস্তারিত জানা যাবে।

বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ঘটনাটি সত্য। তবে ঘটনাস্থলটি বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের আওতাধীন হওয়ায় তারাই বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবে। কোস্টগার্ডের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।

কোস্টগার্ডের শাহপরীর দ্বীপের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন। আমরা ট্রলারটির ঘাটে আসার অপেক্ষায় আছি। ট্রলার পৌঁছালে বিস্তারিত জানা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *