স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, একবারে লন্ডভন্ড অবস্থায় বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের টিকে থাকা রেমিট্যান্স ছাড়া সম্ভব হতো না। মঙ্গলবার ইতালির রোমে বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার সময় কর্মরতদের বেতন দেওয়া বা আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধের মতো কাজের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। কোথা থেকে শুরু করা হবে—বুঝতে পারছিলাম না। তখন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সই সরকারের শক্তি যুগিয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশিরা যে দেশেই যায় সেখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, ইতালিও এর কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরেছে। এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন।
এর আগে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোমে ডব্লিউএফপি’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান কার্ল স্কাউরের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংকট এবং স্কুলে খাদ্য কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের আশ্রিত ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন কার্ল স্কাউ।
ড. ইউনূস রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা (FAO)-এর মহাপরিচালক ড. কু দোং ইউরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও অংশ নেন। সেখানে তিনটি নতুন খাতে সহায়তা চাওয়া হয়। বৈঠকে আলোচিত খাতসমূহ হলো: গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণে সক্ষমতা বৃদ্ধি, ফল রপ্তানির জন্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং ফসল-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ ও স্বল্পমূল্যের বহনযোগ্য কোল্ড স্টোরেজ সুবিধা প্রতিষ্ঠা। FAO মহাপরিচালক বাংলাদেশকে ‘উচ্চ কর্মদক্ষ দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সংস্থাটি কারিগরি সহায়তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহযোগিতা প্রদান করবে।
প্রধান উপদেষ্টা রোমে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটিকে সহায়তা দেওয়ায় রোমের মেয়র রবার্তো গুয়ালতিরিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ইতালিতে বাংলাদেশিরা দেশটির সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে সমাজ ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
ড. ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের টিকে থাকা এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আহ্বান জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের উন্নয়ন ও সমাজের কল্যাণে এই অবদান অব্যাহত রাখুন।