কলাপাড়া প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জমি দখল, মিথ্যা মামলা ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগে উপজেলা কৃষক লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের নয়াকাটা স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকায় ছোনখোলা ও তারিকাটা এলাকার সাধারণ জনগণের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মো. হারুন মৃধা, ইব্রাহিম হোসেন, মিরাজ হোসেন, আসমা বেগম ও হাসিনা বেগম।
বক্তারা অভিযোগ করেন, অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয়দের জমি দখল এবং একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে আসছেন। তিনি ইতোমধ্যে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০টিরও বেশি মামলা করেছেন, যার অধিকাংশই চাঁদাবাজি ও জমি সংক্রান্ত মিথ্যা মামলা বলে দাবি করেন বক্তারা।
তারা আরও বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও অদৃশ্য কোনো শক্তির আশীর্বাদে অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন এখনো প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে হয়রানি করে যাচ্ছেন। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানানো হলেও মিলছে না প্রতিকার।
ভুক্তভোগী হারুন মৃধা বলেন,
‘আমাদের হরেন্দ্রপুর মৌজার ৫ একর জমি বহু প্রজন্ম ধরে ভোগদখলে রয়েছে। কিন্তু আনোয়ার উকিল ভুয়া দলিল দেখিয়ে সেটি নিজের নামে নিতে চান। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তিনি আমাদের নিঃস্ব করে ফেলেছেন। কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে আমি পাগল হয়ে গেছি।’
আরেক ভুক্তভোগী ইব্রাহিম হোসেন বলেন,
‘আমরা গরিব মানুষ। কোর্ট-কাচারিতে ঘুরে ঘুরে সর্বস্ব হারাচ্ছি। আনোয়ারের অন্যায়ের বিচার চাই, প্রশাসন যেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।’
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৌলতলী মৌজার প্রায় ৫ একর জমি মোকলেছুর রহমানের ওয়ারিশদের এবং হরেন্দ্রপুর মৌজার আরও ৫ একর জমি ইউসুফ মুন্সী পরিবারের নামে মালিকানাধীন। কিন্তু ওইসব জমির খতিয়ান ও রেকর্ড জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের নামে নেয়ার চেষ্টা করছেন অ্যাডভোকেট আনোয়ার।
স্থানীয়রা জানান, আনোয়ারের বিরুদ্ধে কথা বলায় অন্তত ৩০ জনকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের মাছের ঘের থেকে মাছ ধরার অভিযোগে স্থানীয়দের নামে ৩০ লাখ টাকার চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। এমনকি নিজের চাচাকেও মামলা থেকে রেহাই দেননি তিনি।
এ বিষয়ে জানতে অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন কোর্টে আছি।’ এরপর তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত করে ভূমিদস্যু অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।