আলমাস হোসাইন :
ঢাকার আশুলিয়ায় গ্রাহকের দলিল লিখে দেওয়াকে কেন্দ্র করে মো. শাহাদাৎ হোসেন (৪৮) নামের এক দলিল লেখককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সহকর্মী কয়েকজন দলিল লেখকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রবিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শাহাদাৎ হোসেন আশুলিয়ার মধ্যগাজীরচট ইউনিক এলাকার হাজী মো. তৈয়ব আলীর ছেলে। তিনিও পেশায় একজন দলিল লেখক।
মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন— সাভারের বনপুকুর এলাকার মৃত শামসুল হকের ছেলে মো. আলমগীর হোসেন (৪৮), তার ছোট ভাই মো. মনসুর (৩৫), আশুলিয়ার নয়ারহাট ঘুঘুধিয়া এলাকার মো. মোতালেব হোসেন (৪৫), চানগাঁও এলাকার অনিক হাসান দিলবর (৩৫) এবং ইয়ারপুর এলাকার মো. ফজলুল হক (৫৮)।
তারা সবাই আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক হিসেবে পরিচিত।
ঘটনার বিবরণ
মামলার এজাহারে জানা যায়, অভিযুক্তরা প্রায় চার মাস ধরে আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখার কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যে কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন। তবে গোপনে তারা ভিন্ন প্রক্রিয়ায় দলিল সম্পাদন করে আসছিলেন। এ অবস্থায় তারা ভুক্তভোগী শাহাদাৎসহ আরও কয়েকজন দলিল লেখককে কাজ থেকে বিরত রাখতে নানা হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
৫ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে শাহাদাৎ তার অফিসের সামনে গ্রাহকের দলিল সম্পাদনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অভিযুক্তরা লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। এতে তার হাত, পা, পিঠ ও কোমরে গুরুতর জখম হয়।
এসময় হামলাকারীরা তার পকেটে থাকা নগদ ৫৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং হুমকি দেয়— “আর দলিল লিখতে অফিসে গেলে হাত-পা ভেঙে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা তার চিৎকারে এগিয়ে এসে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগীর বক্তব্য
ভুক্তভোগী শাহাদাৎ হোসেন বলেন,
আমি গ্রাহকের দলিল লেখার জন্য অফিসের সামনে অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ তারা এসে আমার ওপর হামলা চালায়। আমি জীবনের নিরাপত্তা চাই। এই সন্ত্রাসী হামলার সুষ্ঠু বিচার ও হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
পুলিশের অবস্থান
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন,
দলিল লেখক শাহাদাৎ হোসেনকে মারধরের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা না হলেও আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্থানীয়রা জানান, আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে কিছু দলিল লেখক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে সাধারণ গ্রাহক এবং অন্যান্য দলিল লেখকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।