মোঃ আনজার শাহ:
কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে ‘রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং’ কোর্সের প্রথম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দেশ ও বিদেশে এই খাতে দক্ষ টেকনিশিয়ানের ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
বর্তমান সময়ে রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং একটি অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি ক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দেশে-বিদেশে এই খাতের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটছে। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দক্ষ কারিগরি জনশক্তির চাহিদা।
কোর্স আয়োজকরা জানান, এই কোর্সের মূল লক্ষ্য হলো প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একজন আত্মবিশ্বাসী ও দক্ষ টেকনিশিয়ান হিসেবে গড়ে তোলা, যিনি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কারিগরি জনশক্তি মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের জন্য পাড়ি জমান।
বিশেষ করে রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং টেকনিশিয়ানদের চাহিদা এসব দেশে অত্যন্ত বেশি। তবে দক্ষতার অভাবে অনেকেই কাঙ্ক্ষিত বেতন ও পদ পান না। এই সমস্যা সমাধানে মানসম্মত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
শুধু বিদেশেই নয়, দেশের অভ্যন্তরেও এই খাতে রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা। দেশে আবাসিক ভবন, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিং মল, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রেফ্রিজারেশন ও এসি সিস্টেমের ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এসব জায়গায় নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য দক্ষ টেকনিশিয়ান প্রয়োজন। কারিগরি শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে একজন টেকনিশিয়ান দেশে-বিদেশে মাসিক ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বা তার চেয়ে বেশি আয় করতে পারেন। এছাড়া নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুযোগও রয়েছে এই ক্ষেত্রে।
ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়, এই কোর্সে তত্ত্বীয় জ্ঞানের পাশাপাশি হাতে-কলমে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এয়ার কন্ডিশনার মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ, ইনস্টলেশন এবং ট্রাবলশুটিং সম্পর্কে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রথম ব্যাচে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই কোর্সের মাধ্যমে যুব সমাজ কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুঁজে পাবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই ধরনের ব্যক্তি উদ্যোগও সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।