দেশে আবারও ১/১১ ধাঁচের পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হতে পারে: রাশেদ খান

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১০টায় ফেসবুকে দেবেনা এক পোস্টে সতর্ক করে বলেছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভেঙে দিয়ে পুনরায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করলে তা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও বিপর্যস্ত করবে। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে না; বরং বিভাজন ও দলে-দলে ছিন্নভিন্নতা বাড়বে।

বিভাজনই আশঙ্কার মূল কারণ

রাশেদ খান বলেন, “নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে গেলে অংশীজন দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে না — বরং বিভাজন বাড়বে।” তিনি আরও বলেন, এই বিভাজনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশে আবারও ১/১১ ধাঁচের পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হতে পারে। এই প্রসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারে অংশ নেওয়ার অপরাধে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সব উপদেষ্টাদের গ্রেফতার করা হতে পারে; অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদেরও রাষ্ট্রদ্রোহী অভিযোগে পাকড়াও করা হবে।”

“বিদেশি এজেন্সি”–র নিয়োজিততার সন্দেহ

রাশেদ মন্তব্যে আরও ব্যক্ত করেছেন যে—গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোকে বিভক্ত করতে যাতে বিদেশি কোনো এজেন্সিয়া কাজ করছে, তারই প্রমাণ তিনি দেখেন। তিনি বলেন, “আমার কাছে মনে হচ্ছে বিদেশি একটা এজেন্সি গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর সম্পর্ক বিনষ্ট করতে কাজ করছে; দলগুলো হয়তো তা বুঝতে পারছে না।” তিনি উল্লেখ করেন, দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ থাকা ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতার তুল্য অন্য কোনো বিকল্প নেই।

ইউনূস প্রস্তাবনা ও সমালোচনা—প্রেক্ষাপট

রাশেদ খান সরাসরি উল্লেখ করেছেন যে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সমালোচনা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন — কিন্তু সেটি অন্যব্যাপার; “কিন্তু তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পক্ষে আমি নই,” তিনি স্পষ্ট করেছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন যে, ইউনূসকে অপসারণ বা উপদেষ্টা পদ থেকে সরানো হলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এবং পুনরায় শক্তভাবে স্বৈরতান্ত্রিক বা প্রযুক্তিবাদী হস্তক্ষেপের সময় দেখা দিতে পারে।

সম্ভাব্য রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল

রাশেদের এই বক্তব্য নীতিগতভাবে দুইটি মাত্রা স্পর্শ করে—একদিকে রাজনৈতিক অংশীদারদের মধ্যে ঐক্য রক্ষা ও অবাধ নির্বাচনের দাবি, আর অন্যদিকে—যেকোনো কৌশলগত পরিবর্তন দেশীয় রাজনৈতিক মানচিত্রে অস্থিরতা ও আইনগত তৎপরতা বাড়াতে পারে। রাশেদ শুন্ছেভাবে সতর্ক করেছেন যে যদি বিভাজন বাড়ে, তা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং পরে রাজনৈতিক ও আইনি প্রতিক্রিয়ার জায়গা তৈরি হবে।

রাশেদের দিকনির্দেশনা: ঐক্যই একমাত্র সমাধান

পরিশেষে রাশেদ খান মনে করান যে “দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতার বিকল্প নাই।” তিনি আরও যোগ করেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যর্থ হলে পুরো বাংলাদেশের স্বপ্ন বিনষ্ট হবে।” তার ভাষায়—এ সম্পর্কে রাজনীতিক দলগুলোকে সংযম দেখাতে হবে এবং দেশীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে ঐক্য বজায় রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *