নেত্রকোনায় বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রচারণায় মনিরুজ্জামান খানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

মোশারফ হোসেন জসিম পাঠান:

নেত্রকোনা জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা কার্যক্রমে আলহাজ্ব মোঃ মনিরুজ্জামান খান (সেলিম) বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। গত ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি রোজ বৃহস্পতিবার, নেত্রকোনার সদর ও বারহাট্টা এলাকায় এই সংস্কার প্রচারণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে হযরত শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (রহঃ) মাজার জিয়ারত ও মিল্লাত মাহফিল দোয়ায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। এই অনুষ্ঠানের পরে তিনি এবং তার অনুসারীরা বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের বিষয়গুলো সম্পর্কে অবহিত করেন।

আলহাজ্ব মোঃ মনিরুজ্জামান খান সেলিম, যিনি নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন এবং নেত্রকোনা পৌর বিএনপির সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত, এই প্রচারণার মূল মুখ্য ব্যক্তিদের একজন। তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের নমিনি হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং সৈরাচারের এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত। লিফলেট বিতরণের সময় তিনি জনগণকে জানান, সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন, নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার, আইনসভা ও বিচার ব্যবস্থার ভারসাম্য, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা।

তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা। নির্বাচনী ব্যবস্থায় দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের সময়সীমা নির্ধারণ, বিচার বিভাগ ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা এবং সংবিধান ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা অত্যন্ত জরুরি।”

বিবিধ ক্ষেত্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আইনসভা ও উচ্চ আদালতের পুনর্গঠন, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার, গণমুখী প্রশাসন, মিডিয়া স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা—সবই এই ৩১ দফা সংস্কারের অন্তর্ভুক্ত। আলহাজ্ব মোঃ মনিরুজ্জামান খান সেলিম বলেন, “আমরা চাই প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কমিশন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব নীতি প্রণয়ন এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলিকে ক্ষমতাবান ও স্বশাসিত করা হোক। এছাড়াও নারীর ক্ষমতায়ন, যুব উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং কৃষি, শিল্প ও যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা আমাদের মূল লক্ষ্য।”

তিনি আরও জানান, “দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি প্রান্তে স্বচ্ছ, ন্যায়পরায়ণ ও জনকল্যাণমুখী প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সরকারের প্রতিটি স্তরে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিতকরণ, বিচার ব্যবস্থার সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ, অর্থনীতি ও পরিবেশ বান্ধব নীতি বাস্তবায়ন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করাই আমাদের প্রচেষ্টার মূল অংশ।”

আলহাজ্ব মোঃ মনিরুজ্জামান খান সেলিমের মতে, “দেশের স্বার্থে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও প্রতিরক্ষা খাতের আধুনিকায়ন অপরিহার্য। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ও স্বীকৃতি নিশ্চিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আধুনিক যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন, বেকার ভাতা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কৃষি পণ্য বিপণন ও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণও আমাদের কর্মসূচির অংশ।”

তিনি জনগণকে অবহিত করেন যে, নদী শাসন ও খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের আধুনিকায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা এবং আণবিক শিক্ষার উন্নয়নও এই ৩১ দফা সংস্কারের অন্তর্ভুক্ত। তিনি জনগণকে বোঝান যে, সব উন্নয়নমূলক নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন ও নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য।

এদিন লিফলেট বিতরণের সময় তিনি উপস্থিত জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আল্লাহর রহমত এবং জনগণের দোয়া ও সমর্থনের মাধ্যমে বিজয়ী হতে পারব। আপনাদের সকলের সহযোগিতা ও সমর্থনের প্রত্যাশী। ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন। এই আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার, প্রশাসনিক ও বিচারিক সংস্কার, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ।”

আলহাজ্ব মোঃ মনিরুজ্জামান খান সেলিমের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই প্রচারণা কর্মসূচি জেলা জুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন অংশগ্রহণ করেছেন এবং ৩১ দফা সংস্কারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন। প্রচারণার অংশ হিসেবে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তিনি সকলের কাছে অনুরোধ করেন, “সংগঠিত ও সচেতনভাবে আমাদের সাথে যুক্ত হন এবং দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নমূলক নীতিমালা বাস্তবায়নে সমর্থন করুন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *