ফ্যাসিবাদীরা নানাভাবে নানা কায়দায় তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে: রিজভী

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, দিল্লি যেন ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। সুতরাং তারা (ফ্যাসিবাদীরা) বসে নেই। তারা নানাভাবে নানা কায়দায় তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই ষড়যন্ত্রকে আমাদের সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘নিম গাছের চারা রোপণ কর্মসূচি’তে তিনি এসব কথা বলেন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ (কৃষিবিদ) এ কর্মসূচির আয়োজন করে। রিজভী এ সময় কয়েকটি নিম গাছের চারা লাগিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে রিজভীকে স্বাগত জানান ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক ড. মোর্শেদ হাসান খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শহিদ জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটি-২০২৫ এর আহ্বায়ক ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. সোহাগ আওয়াল, সদস্য প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ড. লুৎফর রহমান খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও ঢাবি সাদা দলের অন্য নেতারা।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, ইতোপূর্বে যারা দেশের টাকা পাচার করেছে, অর্থনীতিকে একটি হুন্ডির চক্রের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছিল তাদের জন্য ফের উত্থান না ঘটে। গণতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে একে অপরের প্রতি আলোচনা-সমালোচনার বিষয়টি থাকলেও আমাদের মধ্যে একটা ন্যূনতম ঐক্য থাকতে হবে। এই ঐক্য যদি না থাকে তাহলে সেই ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটা অস্বাভাবিক হবে না। আপনারা জানেন, পাশের একটি দেশ ফ্যাসিবাদের সেফহোমে পরিণত হয়েছে। সুতরাং তারা (ফ্যাদিবাদীরা) বসে নেই। তারা নানাভাবে নানা কায়দায় তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই ষড়যন্ত্রকে আমাদের সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। গণতান্ত্রিক শক্তির সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে এই জিনিসগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে এই যে কথা বলছি, সেটা কত আনন্দ-উচ্ছ্বাস বা উল্লাসের তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যখন আমি ছাত্ররাজনীতির কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি, তখন অপরাজেয় বাংলা, মধুর ক্যান্টিনে ও সারা ক্যাম্পাসে কত রাজনৈতিক বক্তৃতা, বিতর্ক করেছি। সেই আনন্দের দিন যেন স্বৈরাচারের সময়ে হারিয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় আমরা কখনো কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে যেতে সাহস করতাম না। শেখ হাসিনার আমলে ফ্যাসিবাদের প্রাণকেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। পরিবেশকে বিপন্ন করে ফেলেছিল শেখ হাসিনা। পরিবেশ রক্ষায় সামাজিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে মানবজাতি বৈশ্বিকভাবে একটি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। মানবজাতি তার অস্তিত্ব বিনাশের পথে এগিয়ে চলেছে। বৈশ্বিক উষ্ণয়নের কারণে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে বিজ্ঞানীরা শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। আমরা জানি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড তৈরি করেছে, এখান থেকে বিভিন্ন দরিদ্র বা অনুন্নত দেশগুলোকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই কাজটি আরও গুরুত্বসহকারে করা উচিত, তাহলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার আমলে তথাকথিত উন্নয়নের নামে বড় বড় মেগা প্রকল্প দেখিয়ে বৃক্ষ নিধন ও নদী বন্ধ করে দিয়ে ভূমিদস্যুর খেতাব পেয়েছিল তারা। তাদের প্রতিনিধি ছিলেন ৫ আগস্টের পরে দেশ ছেড়ে পালানো ব্যক্তিরা। তথাকথিত মেগা প্রকল্পের নামে তারা নদী ভরাট করেছে, খাল ভরাট করেছে, তারা বৃক্ষও উজাড় করে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *