বিভিন্ন সময়ে বিয়ে ও বিদেশে লোক পাঠানোর নামে লক্ষ—কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন যুব মহিলা লীগের আইরিন আক্তার

স্টাফ রিপোর্টার:

বিভিন্ন সময়ে বিয়ের প্রতারণা করে সুকৌশলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে যুব মহিলা লীগের আইরিন আক্তার। ঢাকা উত্তরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আইরিন আক্তার। আইরিন আক্তারের পিতা মোঃ আজিম উদ্দিন, ঢাকা উত্তরের ১৩ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত থেকে নিজ মেয়ের একের পর এক প্রায় ১০টির কাছাকাছি বিয়ে করানো এবং অর্থ কামানোর এসব অপকর্মে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে লক্ষ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কাজে সহযোগিতা করত। আইরিন আক্তারের প্রথম বিয়ে হয়েছিল তার গোষ্ঠীর চাচাতো ভাই শরীফ কাজীর সঙ্গে।

ছোটবেলা থেকেই সে স্বভাব ও আচরণে বদমেজাজী ও উচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের নারী ছিলেন। স্বামী শরীফ কাজী তার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারতেন না। বিয়ের কিছুদিন পর শরীফ কাজীর সাথে পারিবারিক বিচার ও আপোষের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকা সুবিধা নিয়ে প্রথম স্বামীর তালাক নিয়েছিল। শরীফ কাজীর পরে দ্বিতীয় বিয়ে ছিল একই গোষ্ঠীর চাচাতো ভাই আক্তার কাজীর সঙ্গে।

আক্তার কাজী তার পিতা-মাতার সঙ্গে থেকেই আইরিন আক্তারকে নিয়ে সংসার করতেন। শ^শুর-শাশুড়ীর অতিরিক্ত সেবা-যত্ন ও দেখাশোনা করা তার পক্ষে বিরক্তিকর হয়ে উঠেছিল। এই ব্যাপারে স্বামী আক্তার কাজী স্ত্রীকে শাসন করতে গিয়ে ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। নিজের বাবা-মায়ের কথা চিন্তা করে স্ত্রী আইরিন আক্তারের বদমেজাজ ও খারাপ ব্যবহারসহ সংসারে অশান্তির কারণে আক্তার কাজীকে আইরিন আক্তারের সঙ্গে তালাক দিতে বাধ্য হতে হয়। তবে আইরিন আক্তার দ্বিতীয় স্বামী আক্তার কাজীর কাছ থেকে দামের মোহর বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল।

রাজনীতিতে যুব মহিলা লীগের ব্যানারে বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ের মধ্যদিয়ে নরসিংদীর যুব মহিলা লীগের নেত্রী পাপিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় আইরিন আক্তারের। পাপিয়া গ্যাংয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে আইরিন আক্তারের। পার্টির বিভিন্ন নেতাদের শারীরিক চাহিদা মেটাতে পাপিয়াকে নারী সাপ্লাইয়ের কাজে জড়িত ছিল আইরিন আক্তার।

পাপিয়া গ্যাংয়ের পাশাপাশি ডিবি হারুনের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে বিয়ে করা স্বামী ও বিদেশে পাঠানোর নাম করে লোকজনকে নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কুস্থ অবস্থা করে রাখত। তৃতীয় স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে পারেনি আইরিন আক্তার। একটার পর একটা বিয়ে করে তালাক দিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তার কাজ।

পর্যায়ক্রমে এভাবে সে প্রায় ১০টির মতো বিয়ে করেছেন আইরিন আক্তার। পিতা আজিম উদ্দিনের তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রশাসনিক খবরদারি ব্যবহার করে ইউরোপের পর্তুগালসহ অন্যান্য দেশে লোক পাঠানোর নামে পাসপোর্টসহ বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়াও ছিল যুব মহিলা লীগের আইরিন আক্তারের কাজ।

পাসপোর্ট ও টাকা নিয়ে কয়েক মাস পরে ভিসা না দিতে পারলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন পাসপোর্টসহ টাকা ফেরত চাইলেও দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে কাউকে টাকা ফেরত দিত না আইরিন আক্তার; বরং আরো উল্টো ধরনের হুমকি-ধামকি দিত।

এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতো না আইরিন আক্তারের বিরুদ্ধে। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরেও আইরিন আক্তার ফেসবুকের মাধ্যমে পর্তুগালে প্রবাসী বাঙালীদের একের পর এক প্রেম ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এখনো অর্থকড়ি হাতিয়ে নিচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত দেশের ও বিদেশের সকল ব্যক্তিরাই আইরিন আক্তারের এসব অপকর্মের দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *