বেগম খালেদা জিয়া গণমানুষের অধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতীক: চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত

মোঃ সোহেল চট্টগ্রাম :
বাংলাদেশের গণমানুষের ভোটাধিকারের সংগ্রাম ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া—এ মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) মাগরিবের নামাজের পর আমানত শাহ (রহ.) মাজারসংলগ্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল ও এতিমদের মাঝে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শাহাদাত বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া গণমানুষের অধিকার আদায়ের নেত্রী। ২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেনের সময় তাঁকে দেশত্যাগের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি জনগণের অধিকার রক্ষার লড়াই থেকে একচুলও সরে আসেননি। ২০০৮ সালে লালদিঘীর জনসভায় তিনি বিএনপির জন্য ভোট চাইনি, বলেছেন—‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও।’”

তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাকে মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাবন্দি রাখা হয়েছে, কারাগারে নির্যাতন করা হয়েছে—এমনকি স্লো পয়জনিং-এর মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তারপরও তিনি আপোষহীন অবস্থান ধরে রেখেছেন।

দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে ডা. শাহাদাত জানান, তিনি সম্প্রতি এভার কেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা দেখে এসেছেন। চিকিৎসক টিমের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “কারাগারের বৈরী পরিবেশে থাকার কারণেই তাঁর কিডনি ও লিভারের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। তবু তিনি জনগণের অধিকার রক্ষার সংগ্রাম থেকে সরে আসেননি।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিশোধের সংস্কৃতি আছে। কিন্তু ১৯৯১ ও ২০০১ সালে ক্ষমতায় থেকেও খালেদা জিয়া কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করেননি। রাজনৈতিক ভদ্রতা ও সংযমকেই তিনি শক্তিতে রূপ দিয়েছেন—যা আজ বিরল উদাহরণ।”

ডা. শাহাদাত ২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেন প্রসঙ্গে বলেন, “যখন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তখন খালেদা জিয়া জানিয়েছিলেন—‘চিকিৎসা নিতে হলে দেশে নেব, মরতে হলে এখানেই মরব।’ তাঁর দৃঢ় অবস্থানের কারণেই বিদেশি মহল ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। ১৬ বছরের নির্যাতনেও দেশ ছাড়েননি তিনি। কিন্তু যারা গণতন্ত্রহীনতার দায়ে মানুষকে কষ্ট দিয়েছে—তারাই পালিয়েছে, আরো পালাবে।”

দোয়া মাহফিল শেষে জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা তবারক আলীর নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা, দীর্ঘায়ু, দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে তনজিমুল মোসলিমীন এতিম খানার শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৯ আসনের বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, কাজী বেলাল উদ্দিন, হারুন জামান, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, আর ইউ চৌধুরী শাহিন, জয়নাল আবেদীন জিয়া, ইসকান্দর মির্জা, মো. মহসিন, গাজী সিরাজ উল্লাহসহ মহানগর বিএনপি, যুবদল ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *