লাবলু মিয়া:
মির্জাপুরকে সারাদেশের জন্য একটি উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জননেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। শনিবার স্থানীয় একটি মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, মির্জাপুরকে এমনভাবে সাজাতে চাই, যেখানে উন্নয়ন হবে দৃশ্যমান, টেকসই ও মানুষের প্রয়োজনভিত্তিক।
সভায় বক্তব্য রাখার সময় তিনি আরও বলেন, “মির্জাপুর শুধু একটি আসন নয়, এটি ইতিহাস, আন্দোলন ও সম্ভাবনার প্রতীক। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার মানুষ উন্নয়নের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এখন সময় এসেছে সেই বঞ্চনার অবসান ঘটানোর। আমরা চাই, মির্জাপুর যেন সারাদেশের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে ওঠে।”
আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা করেন। পরবর্তীতে তিনি টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির পাঁচবারের সাবেক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য এবং শিশু বিষয়ক সম্পাদক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
এই সভায় তিনি উল্লেখ করেন, “আমি রাজনীতি করি মানুষের জন্য, ক্ষমতার জন্য নয়। দীর্ঘদিন ধরে মাঠের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে মানুষের সুখ-দুঃখ, সমস্যা ও সম্ভাবনা খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। সংসদে গেলে মির্জাপুরকে প্রথমেই আমার নজরে রাখব।”
নির্বাচিত হলে তার পরিকল্পনার মূল অঙ্গগুলো তিনি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। তিনি জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কর্মসংস্থান এবং তরুণ সমাজের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “আমরা চাই আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মানসম্মত হাসপাতাল, গ্রাম ও শহরের সড়কব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হোক। এতে মির্জাপুরের মানুষকে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা পাওয়া সম্ভব হবে।”
তিনি আরও বলেন, “তরুণ ও শিশুদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ না হলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হয় না। তাই শিশুদের শিক্ষা, নৈতিক বিকাশ এবং সৃজনশীলতার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার মান উন্নত করা, পাঠ্যক্রম আধুনিক করা এবং নতুন প্রযুক্তি ও দক্ষতা শেখার সুযোগ বৃদ্ধি করা হবে। এই প্রজন্ম মির্জাপুরের ভবিষ্যৎ।”
সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী বলেন, “বিএনপি জনগণের দল। মানুষের আস্থা ও ভালোবাসাই আমাদের শক্তি। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে মির্জাপুরকে একটি আধুনিক, মানবিক এবং উন্নত জনপদে রূপান্তর করা সম্ভব। আমরা চাই এই এলাকার মানুষ যেন উন্নয়নের সুফল সরাসরি অনুভব করতে পারে।”
তিনি রাজনৈতিক কর্মীদের আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটাই: মির্জাপুরকে এমনভাবে গড়ে তোলা যেন এখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও জীবিকার উন্নয়ন স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়। আমরা চাই, মানুষ যেন প্রাত্যহিক জীবনে উন্নয়নের প্রভাব অনুভব করতে পারে। এই লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকীর বক্তব্যে গভীর আশাবাদ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, মির্জাপুরকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। তারা আরও বলেন, নির্বাচনের পরেই মির্জাপুরে সুদৃঢ় পরিকল্পনার মাধ্যমে শিক্ষার মান, স্বাস্থ্যসেবা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে।
এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন, স্থানীয় ব্যবসা, কৃষি এবং ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, “কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। যুব সমাজের জন্য প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হবে। এতে করে মির্জাপুরের মানুষ স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে এবং এলাকার অর্থনীতি সুষমভাবে বিকশিত হবে।”
আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী আরও বলেন, “আমরা চাই, মির্জাপুরের মানুষ যেন নিজ এলাকা নিয়ে গর্ববোধ করে। এজন্য আমাদের পরিকল্পনা হবে টেকসই, মানবিক এবং প্রতিটি মানুষের জন্য উপযোগী। উন্নয়নের ধারা যাতে প্রতিটি মহল্লায় পৌঁছায়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য।”
মির্জাপুরের সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক নেতারা তার এই প্রতিশ্রুতিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তারা মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে যে বঞ্চনা চলছিল, তা এখন শেষ হতে যাচ্ছে। মির্জাপুরে নতুন প্রজন্মের জন্য উন্নয়নের এমন সুযোগ তৈরি করা হবে, যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
সভা শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীরা একমত হন যে, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের সঙ্গে আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী মির্জাপুরকে একটি আধুনিক, উন্নত এবং মানবিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। তাদের বিশ্বাস, সঠিক নেতৃত্ব, পরিকল্পনা এবং জনগণের সহযোগিতা থাকলে মির্জাপুর দ্রুত উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হবে।