সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর কারামুক্ত

মোঃ এহছানুল হক;

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলায় দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছর কারাভোগের পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। তাঁর মুক্তি রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিকোণ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে, যা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
লুৎফুজ্জামান বাবর ২০০৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলায় গ্রেফতার হন। তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, দুর্নীতি, অবৈধ অর্থলগ্নি, ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের অভিযোগে। সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেফতার হন এবং এরপর দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে ছিলেন।
এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছিলেন বাবর এবং তাঁর সমর্থকরা। তাদের মতে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছিল এবং তাকে অন্যায়ের শিকার হতে হয়। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, লুৎফুজ্জামান বাবর নানা অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত ছিলেন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।

লুৎফুজ্জামান বাবরকে দীর্ঘ ১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবাস করতে হয়েছিল। তাঁর কারামুক্তি ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ঘটে, যখন উচ্চ আদালত তার সাজা মওকুফ করে এবং জামিনের আদেশ দেন। আদালত তার মুক্তির পক্ষে যে সিদ্ধান্ত নেয়, তা রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে একটি বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এই দীর্ঘ সময়ে বাবর তার সমর্থকদের কাছে এক প্রতিরোধী চিহ্ন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁকে মুক্তির জন্য নানা আন্দোলন, প্রতিবাদ এবং দাবি উঠে এসেছিল। তাঁর রাজনৈতিক দল এবং পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হয়েছিল যে, মামলাটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তাঁকে কারাগারে রেখে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

কারামুক্তির পর লুৎফুজ্জামান বাবর তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আজ আমি মুক্ত, কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি বিশ্বাস করি, একদিন সত্যের জয় হবে। আমি পুরোপুরি নির্দোষ এবং এই সময়ের মধ্যে অনেক কিছু সহ্য করেছি। আমি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য কাজ করে যাব।”

তিনি আরও বলেন, “যারা আমাকে ফাঁসিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমি ন্যায়বিচার চাই। আমি বিশ্বাস করি, একদিন দেশের মানুষ সত্য জানতে পারবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *