স্বাধীন বিনোদন ডেস্ক:
দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলার দীর্ঘ সময়ে চলা জটিল প্রক্রিয়ার পর এবার গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন।
রিভিশন মামলা দায়েরকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ওবায়দুল্লাহ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
এরপর পরের বছর, ২৪ জুলাই, তিনি ছেলেকে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন। তখন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত নির্দেশ দেন, অপমৃত্যু এবং হত্যার মামলাটি একসঙ্গে সিআইডি’র মাধ্যমে তদন্ত করা হোক।
সিআইডি দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে প্রতিবেদনটি গৃহীত হয়।
চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান।
দীর্ঘ ১১ বছর পর, ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে আবারও সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে হত্যা মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তার মা নীলা চৌধুরী।
২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। এরপর মামলাটি পিবিআই’র (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) মাধ্যমে পুনঃতদন্ত করা হয়।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন।
এরপর, ২০২২ সালের ১২ জুন, সালমান শাহের মৃত্যু রহস্য নিয়ে আদালতের চূড়ান্ত আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করা হয়।
রিভিশন মামলায় বাদীপক্ষের যুক্তি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু বারবার তদন্তে তার মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। মামলাটি দীর্ঘ ২৭ বছরের বেশি সময় ধরে চললেও এখনও চূড়ান্ত রায় আসেনি।
এবারের রায় ঘোষণার দিন ঠিক হওয়ার পর ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। সালমান শাহের অকাল মৃত্যু এবং রহস্যজনক পরিস্থিতি এখনও চলচ্চিত্র প্রেমী ও সাধারণ জনগণের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।