স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সীমান্তে পুশইন বন্ধ ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় রয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (২৬ জুলাই) নারায়ণগঞ্জে র্যাব-১১ সদর দপ্তর ও পুলিশ লাইনস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে লুট হওয়া অস্ত্রসহ সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা সব অবৈধ অস্ত্র দ্রুত উদ্ধার করা হবে। এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের আগে দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না। রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের জন্য মাঠে থাকবে, আর আমাদের কাজ হবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
সাংবাদিকদের প্রতি সত্য প্রকাশের অনুরোধ
সাংবাদিকদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সাংবাদিকরা যদি সত্য তুলে ধরেন, বিভ্রান্তি দূর হবে। আমরা চাই নিরপেক্ষভাবে সব তথ্য আসুক। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই।”
ভারত থেকে পুশইন নিয়ে উদ্বেগ: “নদীর পাড়ে ফেলে যাওয়া অমানবিক”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “গত এক মাসে ভারত থেকে প্রায় ১,৫০০ বাংলাদেশিকে পুশইন করা হয়েছে—এই তথ্য সঠিক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পুশইনের হার কিছুটা কমেছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “ভারত অনেক সময় আমাদের নাগরিকদের নদীর পাড়ে বা জঙ্গলে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বারবার প্রতিবাদ জানিয়েছি, এবং তার ফলও কিছুটা মিলেছে।”
তিনি বলেন, “আমরা ভারতকে স্পষ্টভাবে বলেছি—নিয়ম মেনে নাগরিক ফেরত পাঠাতে হবে, যেমনটা আমরা ভারতীয় নাগরিকদের ফেরত পাঠাই।”
রোহিঙ্গা পুশইন মেনে নেওয়া হবে না
তিনি আরও জানান, “ভারতের কিছু সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে পুশইন করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের গ্রহণ করছি না, ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছি। এটা একটি সুস্পষ্ট বার্তা।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থান মামলায় অগ্রগতি
গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেক মামলার তদন্ত এগিয়েছে। তবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু নিরপরাধ মানুষকে আসামি করা হয়েছে, যেটা তদন্তে বিলম্ব ঘটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা সতর্ক।”
মোহাম্মদপুর ছিনতাই: গ্রেপ্তার ৩, শনাক্ত ৪
আলোচিত মোহাম্মদপুর ছিনতাই মামলার বিষয়ে তিনি জানান, “চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে, এর মধ্যে তিনজন গ্রেপ্তার, এবং ছিনতাই হওয়া ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে। দোষীদের ছাড় দেওয়া হবে না, এবং যারা দায়িত্বে অবহেলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তারা
পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, বাংলাদেশ পুলিশ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তাসমিন আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ইসরাত জাহানসহ পুলিশের ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।