আব্দুল গফুর:
কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী ছাড়াও বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা রয়েছে। অনেকে দালালদের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হন। নানা মানুষের ভিড়ে আদালত প্রাঙ্গণে পকেটমা, ছিটকে চুর ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্যও তুলনামূলকভাবে বেড়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, কক্সবাজার দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে হকারদের রাজত্ব চলছে। শতাধিক হকার ইজারা ছাড়া অবৈধভাবে চাঁদা নিয়ে কাঁচা বাজারে অবাধে বিচরণ করছে। কেউ কেউ স্থায়ী আসনও গড়ে তুলেছেন। এছাড়া আদালত চত্বরে পাগলবেশী মাদকসেবীদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো।
ময়লা ভাগাড় ও মশার অভয়ারণ্য
আদালত প্রাঙ্গণে বিভিন্ন আবর্জনার স্তুপে দুর্গন্ধের পাশাপাশি মশার অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতে প্রবেশের প্রধান ফটকের দুপাশে আবর্জনার স্তূপ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এসব স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে আসামি আনার সময়ও আবর্জনার পাশেই রাখা হয়। সেখানে তাদের সঙ্গে আত্মীয়-স্বজনরা কিছুক্ষণ দেখা ও কথা বলার সুযোগ পান। প্রিজন ভ্যানগুলো ঘিরে তারা ময়লা-আবর্জনার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকেন। এছাড়া আদালত ভবনগুলোর নিচের চারপাশেও রয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীরা দ্রুত এসব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার দাবি জানিয়েছেন।
আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং পর্যাপ্ত টয়লেট সুবিধা নেই। দায়রা জজ আদালতের ভবনে থাকা টয়লেটগুলো প্রায়ই তালাবদ্ধ থাকে। সম্প্রতি কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রধান বিচারপতি উদ্বোধন করেছেন ‘ন্যায় কুঞ্জ’ নামে একটি সেবা কেন্দ্র, যেখানে বিচার প্রার্থীদের বিশ্রামাগার রয়েছে, তবে সেখানে কুলিং কর্ণার ছাড়া কার্যকর ব্যবস্থাপনা নেই। অধিকাংশ টয়লেটে ব্যবহার করতে টাকা দিতে হয়। জেলা জজ আদালতের পাশে নতুন করে ন্যায় কুঞ্জে গণটয়লেট স্থাপন করা হয়েছে, তবে সেখানে দুর্গন্ধ এতই তীব্র যে প্রবেশ করাই দুষ্কর। পুরুষদের টয়লেটের দরজা খুবই সরু হওয়ায় প্রবেশও কঠিন। নারী ও শিশু বিচার প্রার্থীদের জন্য থাকা বিশ্রামাগারে তেমন ভিড় দেখা যায় না।
আদালত প্রাঙ্গণে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা ও দালালদের কার্যক্রমের কারণে অনেকে নিঃস্বও হন। অনেক সময় আদালত প্রাঙ্গণে অপহরণের ঘটনাও ঘটছে। নানা মানুষের ভিড়ে পকেটমারদের দৌরাত্ম্যও কম নয়। বিচারপ্রার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজর জরুরি।