কক্সবাজারে বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুবিনকে অব্যাহতি

আব্দুর রহমান :

মহেশখালীর কালারমারছড়া মঈনুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসার বহু অনিয়মের হোতা সমালোচিত বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুবিনুল হককে শেষ পর্যন্ত অব্যাহতি প্রদান করেছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই দুর্নীতিবাজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মৌলানা মুবিনুল হকের বিরুদ্ধে বার বার সংবাদ প্রকাশের পর ও মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অদৃশ্য সমর্থনে তিনি দাপটের সাথে পার পেয়ে যায়। অবশেষে প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাকে গত ৭ অক্টোর অব্যাহতি প্রদান করেন ইউএনও মহেশখালী।

এমন কোন অনিয়ম ছিলো না যা সে করেনি-এমন’ই জানান স্থানীয় সচেতন মহল। মাদ্রাসার জায়গা অধিগ্রহণের টাকা গোপনে উত্তোলণ করে কিনেছেন দোকান, বসতভিটা মূল্যবান জায়গাজমি। বিষয়টি স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সভাপতি মঈনুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা মোঃ হেদায়েত উল্ল্যাহকে অবগত করেন। এর প্রেক্ষিতে তাকে শোকজ করেন ব্যাংক হিসাব বিবরণী সহ জবাব দিতে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুবিনুল হক এর দেওয়া তথ্যে মাদ্রাসার টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক তথ্য পাওয়ায় তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করে বাংলা প্রভাষক মনজুর আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন ইউএনও মহেশখালী। অনেকেই জানান তথ্য দেন আজ্ঞাবহ লোকজন নিয়ে কমিটি করে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ সময়ে তাদের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল।

ইতিপূর্বের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দের কাছে তথ্যবহুল অভিযোগ দেওয়ার পরেও মুবিনুল হকের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতেন না। বেপরোয়া মুবিনুল হককে অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হেদায়েত উল্ল্যা তার সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রাথমিক পদক্ষেপে তাকে অব্যাহতি প্রদান করায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রসংশায় ভাসছেন ইউএনও মহেশখালী। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পৈত্রিক সূত্রে তেমন কোন সহায়সম্পদের মালিক না হলেও কক্সবাজার পৌরসভায়, খুরুশ্কুল সহ মহেশখালীতে রয়েছে কোটি টাকার সম্পদ। ইতিপূর্বে বিভিন্ন ভুয়া ভাউচারে মাদ্রাসার নগদ তহবিল আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন অনেকেই। তবে তার টাকার তদবিরে অনেক অভিযোগ আলোর মুখ দেখেনি এমনই জানান স্থানীয়রা। এমনকি ঘুর্ণীঝড় হামুনে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে তিন বান টিন ও নগদ টাকা প্রদান করেন উপজেলা প্রশাসন। সেই টিন গোপনে বিক্রি করে দিয়ে আত্মসাৎ করেন মুবিনুল হক।

বিষয়টি নিয়ে দৈনিক পত্রিকা সমূহে তথ্যবহুল সংবাদ পরিবেশনের পর উদ্ধার হয় টিন। মাদ্রাসার পার্শ্ববর্তী মসজিদ কমিটির দায়িত্ব নিয়েও টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আলিম এমপিওভুক্তির পর শিক্ষক নিয়োগে মোটা অংকের টাকার লেনদেনের অভিযোগও পুরনো। এছাড়াও এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত পাঁচ জন শিক্ষকের কাছ থেকেও পনেরো হাজার টাকা নিয়েছেন এমন তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রের। মুবিনুল হক এর আর্থিক কেলেংকারী অতঃপর অব্যাহতি বিষয়ে জানতে ইউএনও মহেশখালী’র সাথে তাঁর সরকারী মোবাইল নাম্বার ০১৭৩৩-৩৭৩২০৯ এ বার বার ফোন করেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।অব্যাহতিপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুবিন হক এর বহুবিধ অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত পূর্বক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ নিবেন এমনটা আশা করেন সচেতন মহল। তবে অর্ধকোটি টাকার মিশন নিয়ে মৌলানা মুবিনুল হক দৌঁড় ঝাঁফ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে একটি সুত্র।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *