কচুয়া পৌরসভায় টেন্ডার ছিনতাই: দোকান বরাদ্দ বাতিল, স্বজনপ্রীতির অভিযোগে প্রশাসক ও ইউএনও বিতর্কে

জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর :

চাঁদপুরের কচুয়া পৌরসভার ছিনতাইকৃত শিডিউল (দরপত্র) এর দোকান বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় পৌরসভা কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক করে কচুয়া পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী ৭ নম্বর দোকানের বরাদ্দ বাতিল করেন।

এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ—ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে দোকান উদ্ধার হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পৌর প্রশাসক। এ ঘটনায় প্রশাসকের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কচুয়া পৌরসভার দোকান বরাদ্দের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন পৌর প্রশাসক। সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে মামুনুর রশিদ ও ফখরুল ইসলাম পৌর সচিবের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে টেন্ডার বক্সে ৬ ও ৭ নম্বর দোকানের দরপত্র জমা দিতে যান। এ সময় বিএনপি নামধারী জহিরুল ইসলাম ও আরিফের নেতৃত্বে ৮-১০ জন ক্যাডার সচিবের সামনে ধস্তাধস্তি করে জোরপূর্বক দরপত্র ছিনিয়ে নেয়।

ঘটনাটি পৌর প্রশাসককে জানালে তিনি এ বিষয়ে কিছু করার নেই বলে থানায় অভিযোগ দিতে বলেন। পরে কচুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উল্টো অভিযোগকারী মামুনকে শাসিয়ে বলে—“আপনার কাছ থেকে শিডিউল নিতে কেন দিলেন?”

এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় পৌর প্রশাসক ও ইউএনও পৌরসভায় কার্যালয়ে গিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগের কোনো সমাধান না করে টেন্ডার বক্স খুলে কম মূল্যের দরপত্রে ছিনতাইকারীদের নামে দোকান বরাদ্দ দেন। মামুনুর রশিদের ৭ নম্বর দোকানের দরপত্র ছিল ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা, অথচ ৫ লাখ ৫২ হাজার টাকার কম মূল্যের দরপত্রে ছিনতাইকারীদের নামে দোকানটি বরাদ্দ দেওয়া হয়।

ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বৃহস্পতিবার সকালে পৌর প্রশাসক ও ইউএনও জরুরি বৈঠক করে অভিযুক্ত দোকানের বরাদ্দ বাতিল করেন।

তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পৌর প্রশাসকের স্বজনপ্রীতির কারণেই শিডিউল ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কচুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও মামলা হয়নি। তারা স্বরাষ্ট্র সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *