কলাতলীতে পানি পান করার নামে ধর্ষণের চেষ্টা

ভোলা জেলা প্রতিনিধি:

ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার ৫ নং কলাতলী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের তানভির (২৩)-এর স্ত্রীকে পানি পান করার নাম দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ মোঃ জিহাদ (২৩) নামের এক ব্যাক্তির উপর। ১২-আগস্ট-২০২৫, রোজ মঙ্গলবার, রাত আনুমানিক ৯ঃ৩০ থেকে ১০ঃ০০ টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটে বলে খাদিজা জানান।

তানভিরের স্ত্রী খাদিজার অভিযোগ, “ঘর থেকে চলে যেতে বলেন না, না হলে আমি কাকিকে ডাকবো। এরপর জিহাদ আমাকে মুখ চেপে ধরে। আমি জিহাদের হাত থেকে বাঁচতে কামড় দেই। পরে জিহাদ আমাকে ছেড়ে দিয়ে হুমকি দেয়। এরপর জিহাদ আমার বাসা থেকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার স্বামী তানভীর বাসায় আসলে আমি তাকে ঘটনাটি জানাই এবং বলি, আমি এখানে আর থাকবো না। পরে আমার স্বামী তানভীর বলল—’কেন কি হয়েছে?’”

খাদিজা আরও বলেন, “জিহাদ ভাই জাল বসাতে আসছিল। আসার পর আমাদের বাড়ি আসে, এসে আমার কাছে পানি চায়। এক গ্লাস পানি খাওয়ার পরে আবার বলল আমাকে আর এক গ্লাস পানি দেন। আমি যখন পানির জন্য যাই তখন সে আমার ঘরে ঢুকে চৌকির কোনায় বসে। এরপর আমার সাথে কিছু কথা বলে। আমি বললাম—’আমি কাকিকে ডাকবো, ভাই আপনি আমার ঘর থেকে বের হয়ে যান, না হলে আমি চিৎকার করে কাকিকে ডাকবো।’ সবকিছু আমার স্বামীকে জানালাম। সর্বশেষ বললাম—’যা হওয়ার হয়েছে আপনি এগুলো কাউকে বলবেন না, কারণ আমি আপনার স্ত্রী। আমার ইজ্জত হানি হওয়া মানেই আপনার ইজ্জত হানি হওয়া।’ সে বলল—’ঠিক আছে, আমি কাউকে বলব না।’”

পরবর্তী দিন ১৩-আগস্ট-২০২৫ সকাল আনুমানিক ৯ থেকে ১০ টার মধ্যে জহিরের ছেলে আকরাম জিহাদ ভাঙ্গা পোলের কাছে একটা ভাড়া আছে বলে ডাকে। জিহাদ তার হুন্ডা নিয়ে ভাঙ্গা পোলের দিকে রওনা করলেন। সে সিডিএসপি বিল্ডিং বরাবর যাত্রা করলে তানভীর (২৩) পিতা উকিল, মোঃ শহীদ (২০) পিতা আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ আকরাম (২২) পিতা মোঃ জহির, মোঃ শরীফ (২১) পিতা মোঃ আজাদ—এই চার জন মিলে জিহাদকে অতর্কিতভাবে বেধরক মারধর করে। শেষে জিহাদ মার খেয়ে পানি খেতে চাইলে তাকে প্রসাব খাওয়ানোর কথা জানা যায়।

নাম না বলা এক ব্যাক্তির ফেসবুক আইডিতে এমন স্ট্যাটাস পাওয়া গেলে মনপুরা জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

অভিযুক্ত জিহাদ বলেন, “তানভিরকে টাকা ধার দিয়েছিলাম। আজ কয়েক দিন যাবৎ টাকা চাইতে গেলে উত্তেজিত হয় তানভীর। টাকা-পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে আমাকে মারধর করছে। খাদিজা ও তার স্বামী যেগুলো বলছে, এগুলো সব মিথ্যা ও সাজানো।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন—“তাহলে সত্যি বলছে কে?”

জিহাদ মার খাওয়ার পর তার বড় ভাই ফিরোজকে ঘটনার বিস্তারিত জানালে, ফিরোজ ও জিহাদ দুই ভাই মিলে ৫ নং কলাতলী ইউনিয়নের বিএনপি আহ্বায়ক আছিয়ল হক মেম্বার এবং আঃ রহিম মিয়া, কিরন মাঝির নিকট বিষয়টি খুলে বলতে শুরু করেন। এমতা অবস্থায় দুই পক্ষ আবার মারধরে জড়িয়ে পরে। পরবর্তীতে আছিয়ল হক মেম্বার, আঃ রহিম মিয়া, কিরন মাঝি ওখান থেকে উঠে অন্য দোকানে চলে যান।

এবিষয়ে মনপুরা থানার অফিসার ইন-চার্জ মোঃ আহসান কবির বলেন, “এবিষয়ে কলাতলী ক্যাম্পে ও মনপুরা থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। তার পরও আমি খবর নিয়ে দেখছি। যদি কেউ অভিযোগ করে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *