কুষ্টিয়ায় সংবাদ প্রকাশের জেরে হুমকি, খাদ্য পরিদর্শক মিজুর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:


গত ২৭-০৪-২০২৫ ইং তারিখে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মোঃ মিজু আহমেদের সরকারি চাকরি আচরণ বিধি ভঙ্গের সংবাদ প্রকাশের পরে নড়ে চড়ে বসেছেন খাদ্য অধিদপ্তরের খুলনা আঞ্চলিক ও জেলা কর্মকর্তারা। জেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ তদন্তে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।

জাতীয় দৈনিকসহ বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় মোঃ মিজু আহমেদের কোচিং বাণিজ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। উল্লেখ্য, উক্ত খাদ্য পরিদর্শক মোঃ মিজু আহমেদ সরকারি চাকরি পাওয়ার পরও শহরের কাটাইখানা মোড়ে সমবায় মার্কেট-২ এর ২য় তলায় ইংরেজি বিষয়ে (ক্যাডেট + ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি) কোচিং বাণিজ্য করে যাচ্ছেন, যা সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের শামিল।

বিষয়টি খোঁজ নেওয়ার এক পর্যায়ে অভিযুক্ত মিজু আহমেদ এ প্রতিবেদকের নিকট স্বীকার করেন যে, তার কোচিং চালানোর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানেন এবং তাদেরকে জানিয়েই তিনি কোচিং করাচ্ছেন। এদিকে, এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল-ওয়াজিউর রহমানও তার এক বক্তব্যে এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি ইতিমধ্যেই মিজুকে মৌখিকভাবে কোচিং সেন্টার বন্ধ করতে বলেছেন।

এমতাবস্থায় তাদের দু’জনের বক্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার যে খাদ্য পরিদর্শকের কোচিং বাণিজ্যের বিষয়টি কুষ্টিয়া অফিসের সকলেই জানেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে একজন অধীনস্থ সরকারি কর্মচারী যখন সরকারি চাকরি আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে সেই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি? এর পেছনে কি আরও কোনো কারণ আছে?

অন্যদিকে, গত ২৮ এপ্রিল তারিখে খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরীর সাথে অভিযুক্ত মিজুর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছি, ঘটনার সত্যতা মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল-ওয়াজিউর রহমানের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তদন্তকারী দলের প্রধান এম. রাকিব হাসান শাহারিয়ারের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনিও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে, খাদ্য পরিদর্শক মিজু আহমেদের সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই অপতৎপরতা শুরু করেছেন। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন মহলকে দিয়ে প্রতিবেদককে হয়রানি করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে, এমনকি এ বিষয়ে আর কোনো সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য দেওয়া হচ্ছে মামলা-হামলার হুমকি।

গত ২ মে তারিখে কুষ্টিয়াস্থ এ প্রতিবেদকের বাসভবনে গিয়ে কতিপয় ব্যক্তি পরিবারের সদস্যদের নিকট মামলা-হামলার হুমকি দিয়ে আসে। সাংবাদিককে হামলা-মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়ে ৪-০৫-২০২৫ ইং তারিখে মোঃ মিজু আহমেদের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

সাংবাদিক পরিবারে হুমকি-ধামকির বিষয়ে সাংবাদিক রুহুল আমিনের স্ত্রী লাইলী বেগম বলেন, “বিষয়টি খুব দুঃখজনক।” কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রক্রিয়া চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *