স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম। দেশে ফিরে তিনি দেশবাসী ও সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “গাজা এখনো মুক্ত হয়নি, তাই আমাদের লড়াই থামেনি। ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।”
শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজন ও তার শুভানুধ্যায়ীরা।
“আমাদের কাজ শেষ হয়নি”—শহিদুল আলম
বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় শহিদুল আলম বলেন,
“গাজা এখনো মুক্ত হয়নি। সেখানে এখনো বোমা পড়ছে, মানুষ মরছে। গাজাবাসীর ওপর যে নির্যাতন চলছে, তার তুলনায় আমাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা কিছুই নয়। এ লড়াই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও মানবতার জন্য।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বব্যাপী মানুষ ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই সংহতি অব্যাহত রাখতে হবে।”
সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা
ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ড. শহিদুল আলমকে আটকের পর বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার মুক্তি ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জর্ডান, মিশর ও তুরস্কে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোকে সংশ্লিষ্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য তাৎক্ষণিক কূটনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
অপহরণের পটভূমি
এর আগে, মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজাগামী ‘কনশানস’ নামের জাহাজে ছিলেন ড. শহিদুল আলম। বুধবার ভোরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ওই জাহাজে হামলা চালিয়ে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী জাহাজটি আটক করে এবং শহিদুল আলমসহ সব সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী ও ক্রু সদস্যকে অপহরণ করে ইসরাইলি বন্দরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক চাপ ও কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
গাজা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান
দেশে ফিরে শহিদুল আলম বলেন, “এই লড়াই কোনো এক দেশের নয়, এটি মানবতার লড়াই। গাজার মুক্তির জন্য আমাদের কণ্ঠ আরও জোরালো করতে হবে। সাংবাদিক, শিল্পী, সাধারণ মানুষ—সবাইকে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ পর্যন্ত শত শত সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মীও ইসরাইলি বাহিনীর হামলা ও আটকের শিকার হয়েছেন।