ঘুস-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন মানিকগঞ্জ পৌরসভার দুজন নির্বাহী প্রকৌশলী

স্টাফ রিপোর্টার :

ঘুস-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন মানিকগঞ্জ পৌরসভার দুজন নির্বাহী প্রকৌশলী। একজন সদ্য সাবেক বেল্লাল হোসেন এবং বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন। অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এ দুজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে মামলা করা হয়েছে। অথচ ওই মামলার তেমন অগ্রগতি নেই।

এদিকে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী আ ন ম গিয়াসউদ্দিন মানিকগঞ্জ স্টেডিয়ামে সড়কের পাশেই ৮ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়া তিনি ঢাকার সাভারে একটি বাড়ি করেছেন। কয়েক মাস নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পেয়ে ঘুস দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ না করে টাকা আত্মসাত করার অভিযোগে দুদকে একটি মামলা রয়েছে এই দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে।

দুদকের ওই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে মানিকগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পের ৪টি রাস্তার কাজ যথারীতি সম্পন্ন না করে অতিরিক্ত ৬০ লাখ ২০ হাজার ৮শ চুয়াল্লিশ দশমিক নয় পাঁচ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ঠিকাদার এবং সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী বেল্লাল হোসেন এবং বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন। পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক একেএম তানভীর আহমেদ বাদী হয়ে গত ১৯ মে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিসহ ৪ জনকে আসামি করে একটি দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি হচ্ছে মেসার্স এমএ ইঞ্জিনিয়ারিং মেসার্স হোসেন কনস্ট্রাকশন (জেভির) ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মো. মোক্তার হোসেন, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী বেল্লাল হোসেন, বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী আ ন ম গিয়াস উদ্দিন, উপ সহকারী মামুন আল হায়াত। বর্তমানে মামলার আসামি বেল্লাল হোসেন চলতি বছরের অক্টোবর মাসে অবসরে গেছেন। গিয়াস উদ্দিন বর্তমানে মানিকগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে রয়েছেন। মামুন আল হায়াত বদলি হয়েছেন।

এ ছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেন মেসার্স মা ইঞ্জিনিয়ারিং ও হোসাইন কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম। ওইসময় পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিল ছাড়ার কথা বলে ২০ লাখ টাকার ঘুস চাওয়ার অভিযোগ তুলে ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম। চূড়ান্ত বিল নিতে বাধ্য হয়ে তখন ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম নির্বাহী প্রকৌশলী বেল্লাল হোসেনের রুপালী ব্যাংক মানিকগঞ্জ শাখায় ১০ লাখ টাকা দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী বেল্লাল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। গ্রামের বাগান টাকার কারণে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। শহরের দুটি ভবনের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এখানে আরও পার্টনার রয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পৌরসভায় একাধিকবার গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন মামলার কথা শুনেছি। আদালতে মামলা চলছে। সাভারে আমার কোনো বাড়ি নেই। তবে মানিকগঞ্জ শহরের ৭ শতাংশ জায়গার কথা তিনি স্বীকার করে বলেন, ভাই মানুষ বিপদে পড়লে কতজন কতকিছু বলে। পাবলিক প্রসিকিউটর (দুদক) আজিজুল্লাহ বলেন, মাসখানেক আগে একটি এজাহারের কপি পেয়েছি। এখনো তেমন অগ্রগতি দেখছি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *