চট্টগ্রামে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের হামলায় আহত সচেতন নাগরিক, চমেকে ভর্তি

স্টাফ রিপোর্টার :

চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় মাদক ব্যবসা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ায় এক সচেতন নাগরিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত ব্যক্তি জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়ভাবে চিহ্নিত মাদক কারবারি আলমগীর, রেজাউল করিম, আমিন, টাংকি সোহেল, আরমান, নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ, মুন্নী ও পারভীন আক্তারসহ আরও কয়েকজনকে এলাকায় মাদক বিক্রি না করার জন্য নিষেধ করে আসছিলেন। এমনকি একাধিকবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করেও তিনি কোনো প্রতিকার পাননি।

অভিযোগ করেন, “এই নিষেধের জের ধরেই তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার ওপর হামলা চালায় এবং প্রাণনাশের চেষ্টা করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

তিনি আরও জানান, “প্রতিদিন মামলার আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে। তারা কয়েকজনকে বেতনভুক্ত রেখে খুচরা মাদক বিক্রি করায় এবং বিভিন্ন জেলায় পাচার করে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মামলা, হামলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়।”

স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের অভিযোগ, গোটা এলাকাই এখন এই মাদক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। তাদের কারণে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে শত শত যুবক ও সমাজব্যবস্থা। প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার মাদক বিক্রি হচ্ছে এই এলাকায়। তারা মনে করেন, প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যদি কার্যকর অভিযান চালায়, তবে এসব মাদকের আস্তানা টিকবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুই ব্যবসায়ী জানান, “থানার পাশেই মাদকের হাট বসে, কিন্তু পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালায় না। মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে দুই-একজনকে গ্রেপ্তার করেই দায়িত্ব শেষ করে।”

তারা আরও অভিযোগ করেন, “প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা মাসোহারা পান বলেই গডফাদাররা গ্রেফতার হয় না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন মাঝে মাঝে এলাকায় ঘুরে বেড়ান, কিন্তু কাউকে গ্রেপ্তার করতে দেখা যায় না। সরকার তাদের বেতন দিচ্ছে কেন, তা আমাদের জানা নেই।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলমগীর একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি হওয়া সত্ত্বেও প্রকাশ্যে এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। পাহাড়তলী থানা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, “রোগীর মাথায় গুরুতর ক্ষত ছিল, যা সেলাই দেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেন, “এ ঘটনায় বাদীর পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুব দ্রুত আসামিদের গ্রেফতারসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *