শাহিন আহমেদ:
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উচ্চমান সহকারী নুরুল ইসলাম জালজালিয়াতি ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট দিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায় মো. নুরুল ইসলাম জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অফিসে উচ্চমান সহকারী হিসেবে ৪ জুলাই ২০১২ তে যোগদান করেন। আওয়ামী সরকারের মদদ পুষ্ট হওয়াতে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে সহজেই চাকরি বাগিয়ে নেন। আওয়ামী মদদ পুষ্ঠ হওয়ার কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই জামুকায় দায়িত্বরত সকল কর্মকর্তা ও মন্ত্রী তথা সকলের সাথে অল্প সময়ের মধ্যে গভীর সম্পর্কসহ দুর্নীতির একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে ১২ বছরেই প্রায় ৩০ কোটির অধিক টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।
গ্রামে আলিশান বাড়িসহ শনির আখড়ায় স্ত্রী সন্তানের নামে ৭ টি ফ্লাট, আর এস মার্কেটে জুতার দোকানসহ তার পাশেই বিভিন্ন ধরনের ৫ টি দোকান এবং আবাসিক হোটেল। উচ্চমান সহকারী নুরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের বিভিন্ন পদে ২০১২ সালে ১৬ জনকে নিয়োগে সহযোগিতা করেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই ১৬ জনের মধ্যে ৬ জনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপজেলার।কোটা সংক্রান্ত সরকারি বিধানের তোয়াক্কা না করে উচ্চমান সহকারী পদে ৩ জনের মধ্যে ২ জনই বাঞ্ছারামপুর উপজেলার লোক নিয়োগ দেন ।
সাবেক প্রতিমন্ত্রীর আশীর্বাদ পুষ্ট হওয়াই প্রতিমন্ত্রীর ক্যাপ্টেন এ বি এম তাজুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল করে ৫০ জনকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রতিমন্ত্রীর স্বাক্ষর জালিয়াতের বিষয়টি সকলের কাছে জানাজানি হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ইশারায় তৎকালীন মহাপরিচালক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি । ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সে সেকশন অফিসারকেও হেনস্থা করতে দ্বিধাবোধ করে নাই।বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মির্জা ইসমত ইনুনের নামে জালজালিয়াতির মাধ্যমে গেজেট করে সব দোষ সেকশন অফিসারদের উপর চাপিয়েছেন। মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশাল এলাকার ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানোর অন্যতম সহযোগী ও মূল কারিগর এই নুরুল ইসলাম।
ফরিদপুর শালতা উপজেলার মফিজুর রহমান খান, আজিজুল হক মোল্লা,, আব্দুল কুদ্দুস মাতবর গেজেট নং-৬৮৫৯, হারুন অর রশিদ গেজেট নং -৬৮৫০, মৃত গোলাম আরেফিন মোল্লা গেজেট নং- ৬৮৫১, মৃত জামাল উদ্দিনের গেজেট নং -৬৮৯৬ এছাড়াও চরভদ্রাসন এবং নগরকান্দা এলাকার কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা উৎকোচ নিয়ে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট ভুক্ত করেছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উচ্চমান সহকারি মোঃ নুরুল ইসলাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী, শনিআখড়া ও রায়েরবাগ এলাকায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আওয়ামী সংগঠনের লোকদের অর্থ যোগান দিয়েছে। তিনি অফিসে আসেন সকাল ১০ টায় এবং ৩ টার মধ্যেই অফিস থেকে বাসায় চলে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ‘দৈনিক সকালের সময় ‘কে বলেন, উচ্চমান সহকারী নুরুল ইসলাম আওয়ামী সরকারের প্রভাব খাটিয়ে একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণ সহ কথায় কথায় বদলি করার হুমকি দিতেন।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়োগ ও স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে মন্তব্য জানতে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উচ্চমান সহকারি মো. নূরুল ইসলামের মুঠোফোেনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ফোন না ধরার কারণে।