খসরু মৃধা:
গাজীপুরের টঙ্গীতে সরকারি কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই দুই বছর ধরে পরিচালিত হচ্ছে আলিফ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়—হাসপাতালটির নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন, নেই ফায়ার সার্ভিসের সেফটি সার্টিফিকেট, এমনকি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই। সরকারি নিয়ম–নীতির তোয়াক্কা না করেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করলে দেখা যায়—অপারেশনসহ সব ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, “সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কীভাবে এ হাসপাতাল বছরের পর বছর কার্যক্রম চালাচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাব কেউ দিচ্ছে না।” তারা আরও জানান, কমিশনভিত্তিক দালালের মাধ্যমে এখানে রোগী আনা হয়। এলাকাবাসীর দাবি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই হাসপাতালটি পরিচালিত হলেও দীর্ঘদিন ধরে কোনো তদারকি বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে রোগীদের জীবন প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের চেয়ারম্যান শিউলি আক্তার মিলা কে প্রশ্ন করলে তিনি দাবি করেন, “আমার ট্রেড লাইসেন্স আছে। অন্যান্য কাগজপত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছি। বাকি বিষয়গুলো ম্যানেজ করেই প্রতিষ্ঠান চলছে।” সরকারি অনুমোদন না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, “সরকার আমাকে লাইসেন্স দেয়নি, তাই পাইনি। আবেদন করার দায়িত্ব আমার, সেটা করেছি। লাইসেন্স না দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের।”
গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জনকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, “আলিফ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। আপনারা জানালেন—এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, অনুমোদন ছাড়া হাসপাতাল পরিচালনা মানুষের জীবনের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। তদন্তের অগ্রগতি এগোলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।