ডি–৮ এর ওএমএস ডিলার আসাদুজ্জামানের অপকর্ম: গরিবের চাল–আটা নিয়ে প্রকাশ্যে ছিনিমিনি, তদারককারীর ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার:

ঢাকা মহানগরীর খিলগাঁওয়ের নাসিরাবাদ রোডে ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) চাল–আটা বিক্রি কেন্দ্রের চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র আবারো প্রকাশ্যে এসেছে। ডি–৮ জোনের ওএমএস ডিলার আসাদুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত চাল ও আটা নিয়ে প্রকাশ্যে ছিনিমিনি খেলছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সরকারের কমমূল্যের খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম ওএমএসের উদ্দেশ্য হচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষের কাছে ন্যায্যমূল্যে চাল ও আটা পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে তার সম্পূর্ণ বিপরীত। অভিযোগ রয়েছে, ডিলার আসাদুজ্জামান প্রতিদিনই গরিবের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের বিভিন্ন অজুহাতে অপেক্ষায় রাখেন, দেরি করান, আবার অনেক দিন পণ্য শেষ হয়ে গেছে বলে ফেরত পাঠিয়ে দেন, অথচ ট্রাক ভর্তি চাল–আটা তখনও লুকিয়ে রাখা থাকে।

আজ বিকেলে একই ধরনের ঘটনা আবারো ঘটে। দুপুরে সেল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আসাদুজ্জামান বারবার দেরি করেন এবং গরিব মানুষদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই সময় টেনে বিকেল পাঁচটা বাজিয়ে দেন। এরপর তিনি হঠাৎ ঘোষণা দেন—আজ আর চাল বা আটা দেওয়া হবে না। কিন্তু স্থানীয়রা খেয়াল করেন, ট্রাকের ভেতর তখনও প্রচুর পরিমাণ চাল–আটার বস্তা আছে। ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে হলে এলাকাবাসী সাংবাদিকদের খবর দেন। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর পরই ডিলার তড়িঘড়ি করে আবার বিক্রি শুরু করেন। এতে স্পষ্ট হয়, গরিব মানুষের ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত করে চাল–আটা অন্য কোথাও বিক্রির উদ্দেশ্য ছিল। স্থানীয়দের দাবি, এই ডিলার প্রতিনিয়ত কমমূল্যের সরকারি খাদ্যসামগ্রী গরিবদের না দিয়ে গোপনে বেশি দামে পাইকারি বাজারে বিক্রি করেন এবং এতে একটি কালোবাজারি সিন্ডিকেট জড়িত।

ডিলারের এসব অনিয়মে সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে তদারককারী কর্মকর্তা অপূর্ব কুমার–এর বিরুদ্ধে। দায়িত্ব অনুযায়ী তদারককারীর সেল খোলা ও বন্ধের সময় উপস্থিত থাকা, পণ্য ঠিকমত এসেছে কিনা দেখা এবং বিক্রি শেষে স্বাক্ষর করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অপূর্ব কুমার কখনোই সেলের সামনে আসেন না। তিনি প্রতিদিন ফোনে ফোনে ডিলারের কাছ থেকে প্রতি সেলের জন্য দুই হাজার টাকা ঘুষ নেন এবং ডিলার যা বলেন তাই অনুমোদন দেন। আজকের ঘটনার সময়ও ডিলার তাকে ফোন করলেও তিনি ঘটনাস্থলে আসেননি। এমন অভিযোগ প্রমাণ করে যে তদারককারী কর্মকর্তা নিজেই দুর্নীতির মূল জালে জড়িয়ে আছেন এবং ডিলারের অপকর্মের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদারককারী অপূর্ব রায় বলেন, “কিছু ঝামেলা হয়েছিল। আমাকে বলছিল যে খেতে যাবে। তারা যে পুরো ট্রাক নিয়ে চলে যাবে, তা আমাকে বলে নাই। ঝামেলা হওয়ার পরে আবার বিক্রি করেছে। ক্রেতা না থাকায় সব চাল–আটা বিক্রি করতে পারে নাই। আমি ব্যালেন্স দেখিয়ে দিয়েছি। অবিক্রিত চাল ছিল ৭৮০ কেজি এবং আটা ১,৩০০ কেজি—যা সে আগামীতে বিক্রি করবে।”

আজকের ঘটনাটি নজরে আসার পর অনেক এলাকাবাসী তা ফেসবুক লাইভে প্রচার করেন, যেখানে দেখা যায়—গরিব মানুষদের বলা হচ্ছে “মাল শেষ”, অথচ ট্রাকের ভেতর তখনও চাল ও আটা মজুত আছে। এই ভিডিও ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানানো হলে ডি–৮ জোনের এআরও জানান যে ঘটনাটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্থানীয়দের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে—যদি এতদিন ধরে এভাবে প্রতিদিন অনিয়ম চলে থাকে, তাহলে এর পেছনে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট থাকতে পারে, যা দ্রুত তদন্তের দাবি রাখে।

আপনি চাইলে এটাকে নিউজ পোর্টালের মতো সাজিয়ে শিরোনাম, সাবহেড, রিপোর্টারের নাম, ডেটলাইনসহ আরও বড় করে দিতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *