দেশে বেকারত্ব বেড়ে ২৮ শতাংশে: সাভারে যুব ও ক্রীড়া সচিব

আলমাস হোসাইন :

বাংলাদেশে বেকারত্বের হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে এ হার ছিল ২০ শতাংশ, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ শতাংশ। দেশের কর্মসংস্থানের এই চিত্র তুলে ধরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব-উল-আলম।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে সাভারের কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রে আয়োজিত ১৬তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদপত্র বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সচিব এ তথ্য জানান।

বেকারত্ব বৃদ্ধির কারণ

মাহবুব-উল-আলম বলেন, “বাংলাদেশে বেকারত্ব বৃদ্ধির পেছনে নানা জটিলতা কাজ করছে। দুর্নীতি, ব্যাংক খাতে ঋণের ঘাটতি, শিল্প ও বাণিজ্য খাতে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ না হওয়া, দক্ষতা ও বাজারচাহিদার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব—সব মিলিয়েই পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে।”

তিনি জানান, অর্থনীতির চাকা সচল থাকলেও তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ এখনও কর্মসংস্থানের বাইরে থেকে যাচ্ছে, যা সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

সমাধানে পদক্ষেপ

তবে আশার কথা জানিয়ে সচিব আরও বলেন, “বেকারত্ব দূরীকরণে সরকার ইতোমধ্যেই নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারা দেশে বর্তমানে ৭১টি ট্রেনিং সেন্টার কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব কেন্দ্রে বেকার যুবকদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনকারীরা শুধু চাকরি খুঁজবেন না, বরং নিজেরাই কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে পারবেন। এজন্য বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিতরা

এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গ্রেড (১) ড. গাজী সাইফুজ্জামান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অনু বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. শেখ মোহাম্মদ জোবায়ের হোসেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন) এম এ আখের, যুব উন্নয়ন একাডেমির অধ্যক্ষ ও প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ সেলিম খানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রশিক্ষণ কোর্সের প্রেক্ষাপট

দুই মাসব্যাপী এই বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রশাসনের প্রায় ৩০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। কোর্স শেষে কর্মকর্তাদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শুধু সরকারি উদ্যোগ নয়—সামাজিক ও বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। কর্মসংস্থান তৈরি এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তরুণদের উৎপাদনশীল খাতে যুক্ত করা গেলে বেকারত্বের বোঝা অনেকাংশে কমে আসবে।

তরুণদের প্রত্যাশা

তরুণদের প্রতি বার্তা দিয়ে সচিব মাহবুব-উল-আলম বলেন, “সরকারি ট্রেনিং সেন্টারগুলোর সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে দক্ষতার বিকল্প নেই। আজকের তরুণরা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়বে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *