দেশে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠান এখন আর নেই: অর্থ উপদেষ্টা

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:


দেশে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠান এখন আর নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আইনের ব্যত্যয় ও প্রক্রিয়ার ধ্বংসের ফলে দেশ সংকটময় অবস্থায় পৌঁছেছে।

শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমানের লেখা ‘অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা: যাপিত জীবনের আলেখ্য’ গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

“মানুষের পরিবর্তন হয়নি, সুশাসন প্রতিষ্ঠা খুব কঠিন”

সালেহউদ্দিন বলেন, “মানুষগুলো তো রয়েই গেছে, তাদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন হয়নি। অনেকেই বলে সব কিছুই বাদ দিয়ে দিতে, কিন্তু তা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় মাথায় হাত বুলিয়ে, ধমক দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, সুশাসন প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত কঠিন এবং এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর মতো সংসদ সদস্যদের ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নেই। রাজনৈতিক দলগুলোতেও সংস্কারের অভাব রয়েছে।

ব্যাংক খাতের অবস্থা শোচনীয়

তিনি বলেন, “গত বছরের আগস্টে যখন বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিয়েছে, তখন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্বে বিরল এক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হয়েছিল। দেশের ব্যাংক খাতের ৮০ শতাংশ অর্থ দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, আন্তর্জাতিক আর্থিক তহবিল (আইএমএফ) জানায়, বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের পুনর্গঠনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১৮ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তা বেড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য

গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “দেশে কোথাও কোনো সুশাসন বা নিয়ন্ত্রণ নেই। পুলিশ বাহিনীতেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। একজন ব্যবসায়ী বলেছেন, আগে এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে হতো, এখন তা বেড়ে পাঁচ লাখ টাকা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “রাতারাতি সংস্কার সম্ভব নয়, এজন্য সময় লাগবে। তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে বসে থাকা যাবে না। কোনো কিছুই চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। দ্রুততম সময়ে গণতান্ত্রিক পথে ফেরত আসতে হবে।”

ফখরুল বলেন, “গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জনগণের প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠিয়ে দেশের সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।”

লেখক হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্ব

গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লেখক হোসেন জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দেশ ও রাজনীতির নানা স্তরের বিশিষ্টজনেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *