প্রাথমিকে উপজেলা ভিত্তিক সকল শূন্য পদ পূরণের মাধ্যমে পূনরায় ফলাফল প্রকাশের দাবী

মোঃ মাহাবুব আলম স্টাফ রিপোর্টার:

 

প্রাথমিক উপজেলা ভিত্তিক
সকল শুন্য পদে পুরণের মধ্যেমে পূর্ণরায় ফলাফল প্রকাশের দাবি
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ এর তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয় গত ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া বাকি ২১ টি জেলায় ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এরমধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪৬ হাজার ১৯৯ জন এবং চূড়ান্ত নিয়োগ পান ৬ হাজার ৫৩১ জন। এক্ষেত্রে ৩৯ হাজার ৬৬৮ জন প্রার্থী বঞ্চিত হয়।

সরকারি চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণত ১টি শুন্যপদের বিপরীতে ৩ জন কিংবা ৪ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করা হয়। সেক্ষেত্রে তৃতীয় ধাপের নিয়োগের ক্ষেত্রে শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও ১টি শুন্যপদের বিপরীতে গড় অনুপাত ৭.০৭ হারে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ প্রতি ৭ জনে ১ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রথম ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯ হাজার ৩৩৭ জন ও চূড়ান্ত নিয়োগ পায় ২ হাজার ৪৯৭ জন। চূড়ান্ত ফলাফলে তাদের গড় অনুপাত ছিল ৩.৭৪ । অর্থাৎ প্রায় প্রতি ৪ জনে ১ জন কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ২০ হাজার ৬৪৭ জন ও চূড়ান্ত নিয়োগ পায় ৫ হাজার ৪৫৬ জন। চূড়ান্ত ফলাফলে তাদের গড় অনুপাত ছিল ৩.৭৮ । অর্থাৎ প্রায় প্রতি ৪ জনে ১ জন কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু তৃতীয় ধাপের বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলা ভিত্তিক গড় অনুপাতের আকাশ পাতাল ভিন্নতা দেখা যায়। ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ জেলায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীর সংখ্যা ২৯৪৩ জন। আর চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয় মাত্র ২৫৪ জন। যার গড় অনুপাত ছিলো ১১.৫৯। অর্থাৎ প্রায় প্রতি ১২ জনে ১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আবার ঢাকা বিভাগের মুন্সিগঞ্জ জেলায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীর সংখ্যা ১০৫৩ জন। কিন্তু চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয় ২২২ জনকে। যার গড় অনুপাত ছিল ৪.৭৪ জন। অর্থাৎ প্রায় প্রতি ৫ জনে ১ জন কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুর জেলায় প্রতি ১০ জনে ১ জন। গাজীপুর জেলায় প্রতি ৯ জনে ১ জন। এছাড়াও মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, নরসিংদী, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় প্রতি ৮ জনে ১ জন এবং কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কিশোরগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ জেলায় প্রতি ৭ জনে ১ জন। আবার কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলাতে ১২ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং ১২ জন প্রার্থীকেই চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক সহকারী নিয়োগ ২০২৩ সার্কুলারের ১০ নাম্বার বিধিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, উপজেলা ভিত্তিক সকল শূন্যপদ পূরণ করা হবে এবং চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মেধাক্রম অনুসারে নিয়োগ প্রদান করা হবে। গত ২ ডিসেম্বর ২০২৪, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রেরিত চিঠিতে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধীন দপ্তর/সংস্থা এবং মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোতে অনুমোদিত সকল শূন্য পদ পূরণের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। আর সেটা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জন্যও প্রযোজ্য।

প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ এর তৃতীয় ধাপের নিয়োগ টি বর্তমানে আইনি জটিলতার মধ্যে রয়েছে। যা শুনানি শেষে আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, আইনগত ভাবে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমাদের ৩৯ হাজার ৬৬৮ জন সুবিধাবঞ্চিত প্রার্থীদের দাবী আইনগত জটিলতা অতিদ্রুত সমাধান করে সকল উপজেলার সকল শূন্যপদ পূরণ করে পূনরায় ফলাফল প্রকাশ করে বৈষম্য দূর করা হোক। এবং আমাদের কে বেকারত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে; শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *