মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম:
বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশনের যানবাহন শাখার সাবেক শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম মো. আমানুল্লাহ হক সবুজ পি-৩৬৬১৪ এর বিরুদ্ধে ০৯ আগস্ট ২০২৫ ইং তারিখে বোসরা ইসলাম (মহাব্যবস্থাপক-প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগ) একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন যার স্বারক নং- ৩০.৩৪.০০০০.০০০.০৭১.৩১.০০০৫.২৪.১৮৮।
উক্ত কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ, “চট্টগ্রাম স্টেশনে যানবাহন শাখার ইনচার্জ থাকা অবস্থায় বিমানের বিভিন্ন গাড়ি জানুয়ারি-২০২২ হতে জুন-২০২৩ ইং পর্যন্ত মোট ১৮ মাসে ৪৮,৮৫৮ লিটার তেল সরবরাহ করেছেন। অপরদিকে মো. এহেছান পি-৩৬০১৪ যানবাহন মেকানিক (বর্তমান ইনচার্জ) তিনি বিমান চট্টগ্রাম জুন-২০২৩ হতে ডিসেম্বর-২০২৪ ইং তারিখ পর্যন্ত মোট ১৮ মাসে ৩৮,৬০৯ লিটার তেল খরচ করেছে। তুলনামূলকভাবে আপনি (আমানুল্লাহ হক সবুজ) ১৮ মাসে মোট অতিরিক্ত ১০,২৪৯ লিটার তেল বেশি খরচ দেখিয়েছেন যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১২,৬৫,১৩৬.৫৬ (বারো লক্ষ পঁয়ষট্টি হাজার একশত ছত্রিশ টাকা ছাপ্পান্ন পয়সা) টাকা।
যা বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জ্বালানি তেলের গরমিলের সাথে আপনি যানবাহন শাখার ইনচার্জ হিসাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িত মর্মে নিরপেক্ষ তদন্তে তার সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। আপনার এই ধরনের কার্যক্রম বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশন কর্মচারী (চাকরি) আইন প্রবিধানমালা ১৯৭৯ এর ৫৫ ধারা মোতাবেক অসদাচরণের সামিল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
উক্ত অপরাধের জন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা অত্র পত্র প্রাপ্তির ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হল, অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এই আমানুল্লাহ হক সবুজ বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশনের যানবাহন শাখার শ্রমিক লীগের সভাপতি ছিল যার ফলে আইনকে তোয়াক্কা না করে বেআইনি পন্থা অবলম্বন করে যানবাহন শাখাকে ঘুষের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল। বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশনের নিয়মানুযায়ী প্রতি তিন মাস পর পর রোস্টার হওয়ার কথা থাকলেও আমানুল্লাহ হক সবুজ নিজ ক্ষমতা বলে প্রতি মাসে রোস্টার পরিবর্তন করতেন।
যার ফলে প্রতি মাসে রোস্টার বাণিজ্য, তেল চুরি সহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত ছিল। জানা যায়, কার্তিক বর্মণের ডিউটি অপরিবর্তিত রাখতে কার্তিক বর্মণের নিকট থেকে ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) টাকা ঘুষ নিয়েছিল। এ ছাড়াও যানবাহন শাখার ডিউটি অপরিবর্তিত রাখতে বিভিন্ন লোকের নিকট থেকে আমানুল্লাহ হক সবুজ ঘুষ বাণিজ্য করতেন। এ বিষয়ে আমানুল্লাহ হক সবুজকে একাধিকবার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদক বোসরা ইসলামকে (মহাব্যবস্থাপক-প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগ) ফোন করলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে নারাজ।
বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা রওশন কবির জানান, আমানুল্লাহ হকের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শেষ হয়েছে। এখন বিভাগীয় তদন্ত হবে। বিভাগীয় তদন্ত শেষে দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।