স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে যেতে আগ্রহী আবেদনকারীদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে যদি কেউ জালিয়াতি, প্রতারণা বা অবৈধ পথ অবলম্বন করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যার মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চ ১০ বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ভিসা জালিয়াতি ও অবৈধ মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্য সরকার আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, “ভিসা জালিয়াতি শুধু একজন ব্যক্তির স্বপ্নকেই ধ্বংস করে না, বরং পুরো পরিবারকে ধ্বংস হওয়ার মুখে ঠেলে দেয়। যারা এই প্রতারণায় সহায়তা করে, তারা মানুষের উন্নত জীবনের আকাঙ্ক্ষাকে ব্যবহার করে অর্থ লুটে নেয় এবং তাদের ভয়াবহ ঝুঁকিতে ফেলে।”
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার সবসময় বৈধ ও সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা ভিসা আবেদনকে স্বাগত জানায়। যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ, পড়াশোনা বা অভিবাসন—সব ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা যেন সরকারি চ্যানেল ব্যবহার করেন, সেটিই তাদের প্রত্যাশা।
হাইকমিশনারের মতে, মধ্যস্বত্বভোগী, দালাল বা অবৈধ রুটে যাত্রার প্রলোভন দেখানো চক্রগুলো শুধু মানুষের অর্থই লুটে নেয় না, বরং তাদের ভবিষ্যতকেও বিপর্যস্ত করে দেয়। এসব ক্ষেত্রে জড়িতরা নিজেদের অজান্তেই অপরাধচক্রের অংশ হয়ে পড়েন এবং আজীবন আন্তর্জাতিক ভ্রমণে বিপাকে পড়তে পারেন।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য থেকে ভিসা জালিয়াতি শনাক্ত করতে এবং দালালচক্র দমন করতে নতুন প্রযুক্তি ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। কোনো আবেদনকারী ভুয়া কাগজপত্র জমা দিলে তা শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
এতে বলা হয়, “জাল কাগজপত্র, ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট, জাল স্পনসরশিপ বা অন্য কোনো ধরণের প্রতারণা যুক্তরাজ্য সরকার শূন্য সহনশীলতার সাথে বিবেচনা করবে। যে কেউ এই ধরনের কাজ করলে তাকে ১০ বছরের জন্য যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।”
যুক্তরাজ্যে যেতে আগ্রহীদের উদ্দেশে সারাহ কুক পরামর্শ দেন—কোনো দালাল বা অননুমোদিত এজেন্টের সহায়তা না নিয়ে নিজে অনলাইনে বা অনুমোদিত ভিসা সেন্টারের মাধ্যমে আবেদন করার জন্য। এতে আবেদনকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং প্রতারণার ঝুঁকিও কমবে।
হাইকমিশন জানায়, ভিসা জালিয়াতি প্রতিরোধে তারা বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় করছে।