রাউজানে সড়কে ভবন নির্মাণের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রাম রাউজান, নোয়াপাড়ার পশ্চিম গুজরায় মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করে ভূমি বন্দোবস্ত নেওয়া জায়গায় নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ভবন নির্মাণের ফলে এলাকার জনসাধারণের চলাচলে মারাত্মক দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে এলাকার মানুষ দাবি করছেন, নির্মাণাধীন ভবনটি ভেঙে রাস্তাটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।

জনসাধারণের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ জাফর নামের এক ব্যক্তি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান নোয়াপাড়া গুজরার পশ্চিম গুজরায় আহমদুর রহমানের বাড়ীর আলাউদ্দিনের পুত্র নুরুল ইসলাম, তার পুত্র মো. জাহেদুল ইসলাম, মো. শাহেদুল ইসলাম, নিজামুল ইসলাম এবং রফিকুল ইসলাম মিলে জালিয়াতি করে উক্ত জায়গায় ভবন নির্মাণ করছে।

তবে তফসীলোক্ত জায়গাটি পশ্চিম গুজরা এলাকার মৃত আছদ আলীর পুত্র হাজী আকাম উদ্দিনের বন্দোবস্তী মামলা মূলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কর্তৃক বন্দোবস্ত প্রাপ্ত।

রাউজান নোয়াপাড়া বদুমুন্সীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম গুজরা মুনিরিয়া দারুচ্ছুন্নাহ সিনিয়র মাদ্রাসা ও মসজিদ সংযোগ সড়কে অবস্থিত এই জায়গাটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল।

উক্ত আকাম উদ্দিন নিঃসন্তান অবস্থায় ১৯৯৭ সালের ২ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। কোন ওয়ারিশ না থাকার কারণে তফসীলোক্ত জায়গাটি জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।

পরবর্তীতে নুরুল ইসলাম নিজেকে আকাম উদ্দিনের পালক সন্তান হিসেবে দাবি করে জায়গাটি দখল করে সেখানে ভবন নির্মাণ শুরু করেন। এলাকাবাসী হাটাচলার রাস্তা হওয়ায় নির্মাণ না করার অনুরোধ জানালেও তারা তা উপেক্ষা করে দুই তলার ভবন নির্মাণ চালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় মো. জাফর ১৫ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (উত্তর), চট্টগ্রামে মিছ মামলা নং-৭২/২০২৫ইং (রাউজান) দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশক্রমে তদন্ত কর্মকর্তা এস.এম. ছানাউল করিম, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী, গুজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তফসীলোক্ত জায়গাটি আকাম উদ্দিন বন্দোবস্তী প্রাপ্ত।

ওয়ারিশ সনদ প্রমাণ করে, নুরুল ইসলাম আকাম উদ্দিনের কোন ওয়ারিশ নন। সুতরাং, আইন মোতাবেক তাদের উক্ত বন্দোবস্তের মাধ্যমে মালিকানা প্রাপ্ত হওয়া সম্ভব নয়। এছাড়া, তফসীলোক্ত জায়গাটি সরকারী রাস্তা হিসেবে জনসাধারণের ব্যবহারযোগ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে জায়গাটি উচ্ছেদ করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে বিষয়টি যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। তাদের মতে, রাস্তাঘাটের উপর থেকে ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে নেওয়া এবং সাধারণ মানুষের চলাচলের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রাস্তা বা এর অংশের উপর যে ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা রয়েছে, তা বাতিল করা উচিত। রাস্তাটিকে সকলের জন্য উন্মুক্ত ও ব্যবহারের উপযোগী রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *