রাজউক জোন-৭ ইমারত পরিদর্শক মাসুদ রানার ঘুষ বানিজ্য ও অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণ

হাসান আলী:

প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাসের ছোট্ট শহর ঢাকা। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নেই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ বা শিশুদের জন্য বিনোদনের উপযুক্ত ব্যবস্থা। শিশুরা বড় হচ্ছে অস্বাভাবিক ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে। সেই মাঝেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিশাল বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ হচ্ছে, যার অধিকাংশই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর অনুমোদন বা নির্দেশনা ছাড়াই।

image.png

স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ, এই অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণের পেছনে আছে কিছু অসাধু রাজউক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাদের ঘুষ দিয়ে প্রায় সব কাজ ম্যানেজ করা যায়। এরই মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, দয়াগঞ্জ মোড়, ১২১ শহীদ ফারুক সড়ক এলাকায় নির্মাণাধীন ‘বন্ধন সলিমুল্লাহ কমপ্লেক্স’ এর জন্য যথেষ্ট বড় অঙ্কের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে রাজউক জোন-৭ এর ইমারত পরিদর্শক মাসুদ রানা এর বিরুদ্ধে।

প্রায় ৯ তলা বিশিষ্ট এই ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে রাজউকের নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে। ভবনে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই, চারপাশে যথেষ্ট ফাঁকা জায়গা নেই এবং সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো ফায়ার সেফটি বা বিকল্প সিঁড়ির কোনো ব্যবস্থা নেই। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, কোনো দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড ঘটলে ভবনে বসবাসরত বাসিন্দাদের জীবন বিপন্ন হবে।

স্থানীয় এক সূত্র জানিয়েছে, রাজউকের জোন-৭ এর ইমারত পরিদর্শক মাসুদ রানা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভবনটির নির্মাণে সহায়তা করছেন। ইতিমধ্যেই একটি সংস্থা রাজউকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, যাতে ভবনটির অনুমোদনহীন নির্মাণকে তুলে ধরা হয়েছে।

নগর পরিকল্পনাবিদরা মনে করছেন, রাজধানীতে অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণের কারণে শুধু নগরবাসীর নিরাপত্তা নয়, পরিবেশও মারাত্মকভাবে ঝুঁকিতে পড়ছে।

এই বিষয়ে মাসুদ রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অন্যদিকে, ভবন মালিক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “আপনাদের যা বলার ইমারত পরিদর্শক মাসুদ রানার সঙ্গে বলুন।” রাজউক জোন-৭ এর অথোরাইজড অফিসার বলেন, “একাধিকবার সতর্ক করার পরও তারা তাদের মতোই কাজ করে যাচ্ছে। খুব শিগ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

নগরবাসী ও সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, অনুমোদনবিহীন ভবন নির্মাণে দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দরকার, যাতে ভবিষ্যতে কোনো দুর্ঘটনা বা বিপর্যয় এড়ানো যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *