রাজধানীর শেখদী চৌরাস্তা এলাকায় রাজউকের নিয়ম উপেক্ষা করে ৮ তলা ভবন নির্মাণ

স্টাফ রিপোর্টার:


রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন শেখদী চৌরাস্তা এলাকায় রাজউকের বিধিনিষেধ অমান্য করে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি ৮ তলা অবৈধ ভবন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ৭৮/২ নম্বরের পাশের প্লটটিতে কয়েক মাস ধরেই নিয়মকানুন উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে চলছে স্থাপনা নির্মাণ। ভবনটির মালিক হিসেবে পরিচিত মুন্সীগঞ্জ জেলার বাসিন্দা বাবুল মিয়া রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই বহুদিন ধরে এই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভবনটির কোনো ইমারত নির্মাণ অনুমোদন (RAJUK approval) নেই। রাজউকের নির্ধারিত নকশা, উচ্চতার সীমা, সেফটি স্ট্যান্ডার্ড—কোনো কিছুই অনুসরণ করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, রাজউকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কয়েকজন অসৎ অফিসারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের অবৈধ বহুতল ভবন নির্মাণ সম্ভব নয়।

নির্মাণশৈলীর বড় ধরনের অনিয়মও চিহ্নিত হয়েছে। রাজউকের বিধি অনুযায়ী, বহুতল (৮ তলা) ভবন নির্মাণ করতে হলে চারপাশে ৪০ শতাংশ খোলা জায়গা (setback/open space) রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাবুল মিয়ার এই ভবনটিতে চারপাশের খালি জায়গা সম্পূর্ণভাবে দখল করে প্রায় পুরো প্লটজুড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে ভবনটি শুধু বিধি-বহির্ভূত নয়, বরং ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ—
বিল্ডিংটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নির্মাণ হওয়ায় আশেপাশের ভবনগুলো ঝুঁকির মুখে পড়ছে। সংকীর্ণ সড়কে ৮ তলা ভবন নির্মাণে জরুরি পরিস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিস বা অ্যাম্বুলেন্স চলাচলও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাছাড়া বায়ু চলাচল, আলো–বাতাস, স্যুয়ারেজ লাইন—সব কিছুতেই বাড়বে চাপ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্থানীয় জানান—
“আমরা বারবার প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু কেউ কথা শুনছে না। রাজউকের কয়েকজন কর্মকর্তা এখানে নিয়ম না-মানার জন্য টাকা নিয়েছে—এটাই সবাই বলছে। না হলে যেভাবে ভবন উঠছে, এটা অসম্ভব।”

অন্যদিকে, নিয়ম ভঙ্গের বিষয়ে ভবনমালিক বাবুল মিয়া কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

রাজউকের সংশ্লিষ্ট জোন অফিসে যোগাযোগ করা হলে একজন কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্থানীয়রা মনে করছেন, তদন্তের নামে সময়ক্ষেপণ করে নির্মাণ কাজ শেষ করে ফেলার সুযোগ করে দিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল।

শেখদী চৌরাস্তা এলাকায় অবৈধ বহুতল ভবন নির্মাণের এ ঘটনাটি রাজউকের দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের ভূমিকা এবং নগর পরিকল্পনা ব্যবস্থার চরম দুর্বলতা আরও একবার প্রকাশ করেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হবে বলেই আশঙ্কা করছেন নগর বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *