স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় এশিয়ান টিভির সাংবাদিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক মোঃ সায়েদুর রহমান (৩৮)-এর ওপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা, প্রেস কার্ডসহ মূল্যবান সরঞ্জাম ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৌহিদসহ অজ্ঞাত ১০–১২ জন কিশোর গ্যাং সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক শিবালয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বিকেল আনুমানিক ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে, শিবালয় বাজারের বাদল চেয়ারম্যান মার্কেটের একটি দোকানে অবস্থানকালে স্থানীয় তৌহিদ (২০), পিতা মিজান মোল্লা, সাং-জুমদুয়ারা, পোস্ট-তেওতা, থানা-শিবালয় এবং তার সঙ্গে থাকা অজ্ঞাতনামা ১০–১২ জন কিশোর দোকানে এসে সাংবাদিক সায়েদুর রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
গালাগাল করতে নিষেধ করলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে হামলার চেষ্টা করে। তিনি প্রাণভয়ে পাশের অরবিল তেলের পাম্পের সামনে আশ্রয় নিতে গেলে অভিযুক্তরা সেখানে গিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে নীলাফুলা জখম করে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, হামলাকারীরা পরে দোকানে থাকা—
-
একটি প্যানাসনিক AG-AC90 মডেলের ভিডিও ক্যামেরা (মূল্য আনুমানিক ১.৫ লাখ টাকা),
-
দুটি মাইক্রোফোন (মূল্য ১০ হাজার টাকা),
-
দুটি পাওয়ার ব্যাংক (মূল্য ৬ হাজার টাকা),
-
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, আরিচা ঘাট শাখার চেকবই (হিসাব নং: ০২০০০১৩৩১৫৯৯১),
-
এবং এশিয়ান টিভির প্রেস কার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও ব্যাগ নিয়ে যায়।
এ সময় তারা ভুক্তভোগীকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে একই এলাকায় নেশাগ্রস্ত কিশোর গ্যাং সদস্যরা বোয়ালী ডাক্তারখানা এলাকায় এক স্কুলছাত্রীর ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। পরে এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
এদিকে, অনলাইন নিউজ পোর্টাল জুমবাংলা-তে ২৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়,
“হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তিন শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।”
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২১ অক্টোবর দুপুর ১টার দিকে স্কুলে অসুস্থবোধ করলে তার দুই বান্ধবী সঙ্গে নিয়ে শিবালয়ের টুরাখালী এলাকার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও এশিয়ান টিভির সাংবাদিক মোঃ সায়েদুর রহমানের চেম্বারে চিকিৎসা নিতে যায়।
এ বিষয়ে বোয়ালী ডাক্তারখানা এলাকার আজিজুল বলেন,
“আমি শুনেছি সাংবাদিক সায়েদুরের ওপর হামলাসহ দোকানপাটে ভাঙচুর হয়েছে। সায়েদুর ছেলে হিসেবে খারাপ না, সাংবাদিকতা ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দুটোই করে। সম্ভব হলে প্রশাসন দুই পক্ষকে বসিয়ে সমাধান করুক।”
ভুক্তভোগী সায়েদুর রহমান বলেন,
“আমি একজন সাংবাদিক ও চিকিৎসক। হামলাকারীরা শুধু আমার ওপর হামলাই করেনি, আমার পেশাগত দায়িত্বেও বাধা দিয়েছে। আমার ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, প্রেস কার্ড ও চেকবই উদ্ধারে আমি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।”
এ বিষয়ে শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামাল হোসেন বলেন,
“ঘটনাটি পাল্টাপাল্টি অভিযোগের। এক নারীর পক্ষ থেকেও অভিযোগ এসেছে যে তার মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল অথবা সাংবাদিকের ক্যামেরা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে। বিষয়টি তদন্ত ওসির মানবেন্দ্র তদন্তাধীন করছেন।”
এদিকে, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা প্রশ্ন তুলেছেন—
দুপুর ১টা নাগাদ যদি কোনো স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে চিকিৎসকের কাছে যায়, তাহলে শিক্ষকরা বিষয়টি জানতেন কি না, কিংবা স্কুল চলাকালীন সময়ে ছাত্রীরা বাইরে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিল কিনা, তা তদন্ত করা প্রয়োজন।