সোহাগ হত্যাকাণ্ডে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি আইন উপদেষ্টার

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। শনিবার (১২ জুলাই) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

ড. আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘‘রাজধানীর মিটফোর্ডে ঘটে যাওয়া এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে এই ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি

তিনি আরও বলেন, ‘‘এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন-২০০২ এর ধারা ১০ অনুযায়ী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।’’

এদিকে, মিটফোর্ড হাসপাতালে সোহাগকে হত্যার ঘটনায় প্রভাবশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবি করেছেন।

নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য

গত ৯ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের কাছের রজনী ঘোষ লেনে ব্যবসায়ী সোহাগকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে এবং মাথায় বড় পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, সোহাগকে প্রথমে মিটফোর্ড হাসপাতালের গেটের ভেতরে মারধর করা হয়। পরে তাকে টেনে-হিঁচড়ে গেটের বাইরে নিয়ে এসে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। নিহত সোহাগের পরিচয় পাওয়া গেছে এবং তার হত্যার কারণ সম্পর্কে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

প্রতিক্রিয়া ও সরকারি অবস্থান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন এবং অপরাধীদের দ্রুত বিচারের দাবি তুলেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা স্থানান্তরের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘‘এ ধরনের নারকীয় হত্যাকাণ্ড কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। সরকার এই ঘটনার তদন্তে কোনোরকম অবহেলা করবে না এবং অপরাধীদের শাস্তির মুখোমুখি করবে।’’

তবে, এটি একটি বড় প্রশ্ন উঠিয়ে দিয়েছে: কীভাবে রাজধানী শহরের এক busy এলাকায় এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে এবং কেন হত্যাকারীরা এতটা আত্মবিশ্বাসী হয়ে প্রকাশ্যে এমন বর্বরতা দেখিয়েছে?

পুলিশের পদক্ষেপ ও গ্রেফতার

তদন্তকারী পুলিশ জানিয়েছে, সোহাগের হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে এই নৃশংস কাজটি করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়াও, পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার পুরো ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ এখন পুরো ঘটনায় তদন্তে গভীরভাবে মনোযোগী এবং দ্রুততম সময়ে তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করছে।

নেতৃত্বে সরকার ও জনগণের উদ্বেগ

সরকার এই ঘটনার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তির ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘‘এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য সহনশীলতার নীতি অনুসরণ করা হবে এবং অপরাধীদের কোনওভাবেই রেহাই দেওয়া হবে না।’’

এদিকে, সোহাগের পরিবারও তাদের প্রিয়জনের হত্যার বিচারের জন্য সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *