হোটেল আল—মামুন মূর্তিমান এক আতঙ্ক,দেহ ব্যবসা ও মাদকের স্বর্গরাজ্য

স্টাফ রিপোর্টার : 

একসময়ের ঢাকা শহরের চিহ্নিত মাদক ও দেহ ব্যবসায়ী রাজীব বাবুর ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন এই আল মামুন, প্রশাসন রাজনীতিবিদ স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী সবার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেই ঢাকা শহরের ১৮ টির অধিক আবাসিক হোটেল পরিচালনার দায়িত্ব পান এই আল মামুন। একসময় রাজীব বাবুর বয়সের ভারে ব্যবসায়িক থেকে দূরে সরে গেলেও আল মামুন হয়ে ওঠে সক্রিয়। একের পর এক অসামাজিক আবাসিক হোটেল গড়ে তোলে এই আল মামুন। প্রায় ১৫০ এর অধিক ক্যাডার স্টাফ নিয়ে সাম্রাজ্যের অলিখিত ডন হিসেবে পরিচিত অন্ধকার জগতের বাসিন্দা আল মামুন। দ্য ডেইলি ভয়েস নিউজ এর সংবাদের প্রকাশের পর সরো জমিন অনুসন্ধান পূর্ব বেরিয়ে আসে ঘটনার অনেক তথ্য।

ব্যস্ততম ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান মিরপুর ১ নাম্বার শাহ আলী মাজারের আঁশ পাশে অবস্থিত আল মামুন আবাসিক হোটেল। হোটেলের সামনেই পুলিশ টহলের একটি গাড়ি দেখতে পায় , পুলিশ ফোর্স নিয়ে পায়চারা করছে একজন এএসআই, ঠিক তার সাথেই লিফটের ৯এ আল মামুন আবাসিক হোটেল। কাস্টমার সেজে ফোন করতে একজন সুঠাম দেহের ব্যক্তি নেমে আসেন আবাসিক হোটেলের নিচে। হাত লাড়িয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে বলতে থাকেন ভিআইপি ছাড়া নরমাল কিছু কিন্তু নাই। উত্তরে বলি সমস্যা নাই আমি প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি, কিন্তু সামনে পুলিশের গাড়ির একটু ভয় পাচ্ছি। লোকটি হাসতে থাকে এবং বলে পুলিশ আমার আপনার নিরাপত্তার জন্যই এখানে আছে!

মার্কেটের লিফটের সাথেই আছে জুয়েলারি মার্কেট এবং খ্যাতনামা অনেক ব্রান্ডের শোরুম। ছোট বড় মাঝারি বিভিন্ন বয়সের ছেলে মেয়ে এবং অভিভাবকরা কেনাকাটার জন্য ব্যস্ত। লিফটে প্রবেশ করার পর উপরে অনেকগুলি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সহ একটি গার্মেন্টস থাকায় বিভিন্ন বয়সী মেয়ে ও ছেলে একসাথেই প্রবেশ করি লিফটের ভিতর। রিসিভ করা আল মামুন হোটেলের দালাল অকপটেই বলতে থাকেন
বাজেট ভালো থাকলে সবরকমই এখানে পাবেন, আমি মাথা নিচু করে হাসতে থাকি, লজ্জা পাবারই কথা খোলামেলা কিভাবে এ ধরনের কথাবার্তা বলছে? লিফটের নাইনে প্রবেশ করতেই অবাক হয়ে যায়, কর্পোরেট সিস্টেমে যেন এই পতিতাবৃত্তির প্রতিষ্ঠানটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মিরপুর ১ নাম্বারের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। দেখে মনে হয় এ যেন কারো অজানা নয়, তারপরেও প্রশাসন কেন নিরব? প্রশাসন কি কিছুই জানে না?

দালালকে নিয়ে শুরু হয় দেখার পালা কি ধরনের ব্যবস্থা আছে এই আল মামুন হোটেলে, তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ আছে এখানে মেয়েরা, ৪০ ঊর্ধ্ব বয়সী মহিলা আনুমানিক ১৫ এর অধিক, ১৮ উর্ধ্ব বয়সী নারী ২২ টি, এবং নাবালিকা ১৩ টি ।
ঢ়যুংরপধষ রিলেশনে মিলিত হবার আগে মাদক সেবনেরও ব্যবস্থা আছে একটি রুমে প্রবেশ করে দেখতে পাই ভার্সিটি পড়ুয়া স্টুডেন্ট এবং চাকুরীজীবী ব্যবসায়ী থেকে ক্যাডার কিশোরগ গ্যাং ও সন্ত্রাসীরা সকল শ্রেণীর মানুষ সমাজ ধ্বংসকারী মাদক ইয়াবা সেবন করছে। ২ হাজার টাকা দিলেই মিলবে এক ঘন্টা মাদক সেবন করার সুযোগ।

দালালকে বলি একটু ম্যানেজারের সাথে কথা বলব , কারণ জানতে চাইলে তাকে জানাই ,আসলে আমি রাত্রি যাপন করবো না আমার ২ বন্ধু ইউরোপ থাকেন তারা২ জনে এখানে আজ রাত্রি যাপন করবেন।

আমার কথা শোনার পর দেখা করান জিএম আজাতের সাথে, আজাদ মুচকি হাসি দিয়ে আমার সাথে হ্যান্ডশেক করেন এবং নিয়ে যান একটি স্পেশাল ভিআইপি রুমে। মৃদু মিউজিক চলে একজন ক্যামেরাম্যান শুট করছে অল্প বয়সী লিকলিকে একটি ছেলে বিভিন্নভাবে আলিঙ্গন করছে মেয়েটিকে।
বিষয়টি দেখার পরে আমি লজ্জায় লাল হয়ে যায় আজাদ হাসতে শুরু করে এবং মেয়েটিকে ডাক দেয়। এবং মেয়েটির কোমর চেপে ধরে বলে একদম নতুন। কিছুক্ষণ পরে আরো দুটির মেয়ের প্রবেশের সাথে সাথে ডিজে লাইট সহ ডিজে গান শুরু করে দেয়। আমরা রুম থেকে বের হয়ে যায়। রেট জানতে চাইলে আজাদ বলেন দেশের অনেক উচ্চ মধ্যবিত্ত ছেলেরা এখানে রাত্রি যাপন করে ইনজয় করে যাই। আপনার দুই বন্ধু ইউরোপে থাকে সমস্যা নাই। সার্ভিস ভালো হলে জোর করে টাকা দিয়া যাবে চাইয়া লমু না। হা হা হা হা করে হাসতে থাকেন।

রাত ৯ টায় এয়ারপোর্টে নামার পরেই বন্ধু আসবে মিরপুরের আল মামুন আবাসিক হোটেলে এমন প্রলোভন দেখিয়ে হাত মিলিয়ে বিদায় নেই। আমাকে প্রথমে রিসিভ করা দালালটি সামনে এগিয়ে আসে নিচ পর্যন্ত আমাকে নামিয়ে দিয়ে যায়। অনুসন্ধান ইনভেস্টিগেশনের টিম সামনে এগিয়ে আমার সাথে কথা বললে দালালটির চোখ কপালে ওঠে। তাৎক্ষণিক জায়গা পরিত্যাগ করতে চাইলে আমি তার হাত টেনে ধরি। ভিডিও হচ্ছে এমন কথা বললে দালাল বলেন আমার কোন ক্ষতি করেন না। আপনাদেরকে উঠিয়েছি এমন কথা মামুন সাব জানলে আমাকে জানে মাইরা ফালাইবো।
কথা বলতে বলতে আল মামুন হোটেল পার হয়ে যায়, আবাসিক হোটেল আল মামুনের দালাল আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকেন। ভিডিও ধারণ করেছি এমনটির ভয়ে দালাল মামুন সম্পর্কে আসে আরো অনেক অজানা তথ্য।

তৎকালীন আওয়ামী লীগ স্বৈরাশাসক সরকারের আমলে ছাত্র—জনতার বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডে সক্রিয়ভাবে নেপথ্যে বিশেষ আশ্রয় স্থান হিসেবে মদত দাতা এমন ঘটনা দৃশ্যমান না হলেও দ্য ডেলি ভয়েস নিউজে প্রকাশিত ঘটনার অনেক তথ্য আমাদের কাছে দৃশ্যমান হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দালালের মাধ্যমে আড়ালে থাকা আরো ভয়ানক দৃশ্য উঠে আসে।

হাজী আল মামুন মূলত হজ্জকে পুঁজি করে মুসলমানদের প্রিয় স্থান প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ সাঃ এর পবিত্র ভূমি সৌদি আরবে যাতায়াত শুরু করেন সমাজ বহির্ভূত অনৈতিক দেহ ব্যবসার জন্য হোটেল চালু করার চেষ্টা চালায়। পবিত্র স্থান মদিনার পাশেই জায়েদিয়া নামক স্থানে অসামাজিক দেহ ব্যবসা চালু করেন। বাংলাদেশীদের জন্য সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবে কিস্তি এবং ঋণ করে বেশিরভাগ মানুষ পাড়ি জামায় পরিবারকে ভালো রাখার আসায় ।মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জেত টাকাও সুযোগ বুঝে মামুন তার পকেটে লুফে নেয়। অনেকে সর্বস্বান্ত হয় মামুনদের কারণে সেই পবিত্র স্থান সৌদি আরবেও। সূত্র আরো জানায় মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশ দুবাই বাহরাইন কাতার ছাড়াও ইন্ডিয়াতে নারী পাচার কারী হিসেবে আল মামুনের এই কাহিনী অন্ধকার জগতের কারো অজানা নয়। মধ্যম আয়ের এই স্বাধীন বাংলাদেশের হাজারো পরিবার আজ অর্থকষ্টে জীবন যাপন করছে। বিপথগামী অনেক পরিবারের নারীরা অর্থের আশায় অজানা গন্তব্য পাড়ি দিচ্ছে এমন অনেক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *